সোমবার বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনের স্বাগত ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাষ্ট্রপতি সোয়া এক ঘণ্টার মতো বক্তব্য রাখেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, গণতন্ত্রের বিকাশ, আইনের শাসন সুদৃঢ়করণ এবং সামাজিক শান্তি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিক চর্চা ও অনুশীলন জাতির বিভিন্নমুখী সমস্যার সমাধান দিতে সক্ষম এই বিশ্বাস সরকারের কার্যক্রমে প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রনায়কোচিত ও দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সংবিধান সমুন্নত রেখে এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখে ২০১৪ সালে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সংসদ গঠিত হয়। এর মাধ্যমে বর্তমান সরকারের ওপর দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমান সরকার একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে থেকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, সমস্যা নিরসনে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এবং জাতির অগ্রযাত্রা স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তব রূপ দিতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছে।
সরকার ও বিরোধীদলকে জাতি গঠনে অবদান রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মহান জাতীয় সংসদ দেশের সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। এ প্রেক্ষাপটে আমি সরকারি দল ও বিরোধীদল নির্বিশেষে সবাইকে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদে গঠনমূলক ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।
দেশ গঠনে সবাইকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, আমাদের গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখতে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করতে এবং শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে, বাঙালি জাতিকে আবারও ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে এবং দলমত-পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হবে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনার মাধ্যমে গণতন্ত্রকে একটি সুদৃঢ় ভিত্তির প্রতিষ্ঠিত করে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ কয়েক হাজার নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেছে এ নির্বাচন কমিশন, যা দেশে বিদেশে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে।
রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে দেশের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রযাত্রা, বিনিয়োগ ও শিল্প-বাণিজ্য, খাদ্য, কৃষি, নারী ও শিশুউন্নয়ন, খেলাধুলা, যুব উন্নয়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যপুষ্টি, শিক্ষা, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, পরিবহন ও যোগাযোগ, আবাসন খাত, পর্যটন, সুশাসন ও নাগরিক সেবা, আইন-শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, কূটনৈতিক সর্ম্পক, বিচার ব্যবস্থা, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
এসব ক্ষেত্রে সরকারের সফলতার দিক তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।