৫২ জাতীয় ডেস্ক।।
লেখক ও মুক্তমনা ব্লগারের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়কে ফেসবুকে হত্যার হুমকির বিষয়টি স্বীকার করেছেন র্যাবের হাতে আটক প্রধান সন্দেহভাজন আসামি শফিউর রহমান ফারাবী।
আজ (সোমবার) দুপুরে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা মুফতি মাহমুদ খান এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন। তিনি জানান, অভিজিৎ রায়ের ফেসবুক পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ফারাবী বিভিন্ন সময় অভিজিৎকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
মুফতি মাহমুদ আরও বলেন, ‘ফারাবীর ফেসবুক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সে তার এক বন্ধুকে বলেছে অভিজিৎ রায় আমেরিকায় থাকে। এখন হত্যা করা সম্ভব না। তবে সে যখন দেশে আসবে তখন তাকে হত্যা করা হবে।’
তিনি বলেন, ফারাবী এর আগেও শাহবাগ আন্দোলনের কর্মী ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারের জানাজা পড়ানোয় ইমামকে হত্যার হুমকি দিয়ে গ্রেফতার হন। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
এর আগে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি বাসা থেকে ফারাবীকে আটক করা হয়। আটকের পর র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, ‘ফেসবুকে ফারাবীর স্ট্যাটাস দেখে অভিজিৎ হত্যায় তাঁর সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। সহযোগী মান্নান ও রাহীর সঙ্গে অভিজিৎকে কীভাবে হত্যা করা যায়, সে বিষয়ে ফেসবুকে কথোপকথন করেন ফারাবী।’
এর আগে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলায় ফারাবীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কাছে দুর্বৃত্তদের চাপাতির আঘাতে খুন হন মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ রায়। তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও হামলায় গুরুতর আহত হন। রাফিদা এখনো স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
গত শুক্রবার অভিজিৎ রায় হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আমেরিকা। ঢাকাস্থ ব্রিটিশ দূতাবাস থেকেও উদ্বেগ জানানো হয়। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) তদন্ত কার্যক্রমে সহায়তা দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ জন্য এরই মধ্যে অভিজিতের পরিবার ও বাংলাদেশের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এফবিআইর সদস্যরা। সরকারও বিষয়টিতে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।
গতকাল রোববার প্রথমে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলায় ও পরে টিএসসি চত্বরে অভিজিৎ রায়ের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে তাঁর মরদেহ মগবাজারের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর অভিজিতের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তাঁর মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। জীবদ্দশায় অভিজিতের এটাই ইচ্ছা ছিল বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।