৫২ রাজনীতি ডেস্ক।।
বর্তমানে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের মোড়কে একদলীয় বাকশাল কায়েমের তৎপরতায় লিপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। আজ (শুক্রবার) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আরও বলেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নামে রাজনৈতিক, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিকভাবে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং নৈতিকতা বিবর্জিত প্রহসনমূলক একটি নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা লুণ্ঠন করে বিশ্ববেহায়া সরকার এখন জনগণের সাথে প্রতারণায় লিপ্ত। যে সংসদে ১৫৪ জনই বিনাভোটে নির্বাচিত, বাকী ১৪৬ আসনে আওয়ামী লীগ ও তার দোসরগণ মিলেমিশে বাটোয়ারায় নির্বাচিত। এমনকি জনাব এরশাদ সাহেবসহ তার দলের বেশ কয়েকজনকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরও জোরপূর্বক নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ অনেক বিরোধী প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়নি এবং অনেক প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার পরও ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। বিগত ৫ জানুয়ারি, ২০১৪ নির্বাচনী নাটকে এবার ঠিক উল্টোভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরও আওয়ামী লীগ দলীয় এবং জাতীয় পার্টির অনেক প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। মূলত: আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ভাবে গণতন্ত্রে কখনোই বিশ্বাসী ছিল না বরং প্রতিবারই গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের মোড়কে একদলীয় বাকশাল কায়েমের তৎপরতায় লিপ্ত। এদেশের গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনগণ সর্বকালেই একদলীয় একনায়কতন্ত্রকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এখনও রক্তঝরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শাসকগোষ্ঠীর সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করতে বদ্ধপরিকর।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আন্দোলন দমনে গণহত্যার লাইসেন্স প্রদান করার পর এখন হত্যার দায়মুক্তির আইন করার সরকারী তৎপরতার খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে ইদানিং। শাসকগোষ্ঠীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই-এই আইন শেষ আইন হবেনা; ভবিষ্যতে আরো আইন হবে। অসাংবিধানিক, মৌলিক ও মানবাধিকার হরণকারী কোন আইন আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না। আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারের আওতায় পৃথিবীর অন্যান্য গণহত্যাকারী স্বৈরশাসক এবং তার দোসরদের পরিণতির দিকে লক্ষ্য রাখার পরামর্শ প্রদান করছি শাসকগোষ্ঠী ও তাদের আজ্ঞাবহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় কর্তা ব্যক্তিদের। জনগণ আপনাদের নারকীয় কর্মকাণ্ডের সকল রেকর্ড সংগ্রহ করেছে।
তরিকুল ইসলামের বাসায় বোমা হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে তিনি বলেন, গতরাতে বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, জাতীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী জনাব তরিকুল ইসলামের যশোরের বাসভবনে বোমা হামলা চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। যশোরের বিএনপি’র শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের বাসায়ও একযোগে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এজাতীয় ঘৃণ্য তৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। শাসকগোষ্ঠীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, গণমানুষের ন্যায্য আন্দোলনকে প্রতিহিংসার স্টিম রোলার চালিয়ে স্তব্ধ করা যাবে না বরং দ্রোহের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দিকে দিকে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে আজ। গণআন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে সেই দাবানলেই অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার মসনদ জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোট গণতন্ত্রে বিশ্বাসী এবং শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক জোট। আমরা জাতীয় রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আলোচনা, সংলাপ-সমঝোতায় বিশ্বাসী। জাতীয় এবং জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক মহলের সংকট নিরসনের সকল উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই সরকারী মহলের শুভবুদ্ধির উদয় হবে বলে জনগণ আশা করে। অন্যথায় উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতির দায় সরকারকেই নিতে হবে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।