৫২ জাতীয় ডেস্ক।।
লন্ডনের প্রভাবশালী ম্যাগাজিন দ্যা ইকোনমিস্টে আবারও শিরোনামে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ম্যাগাজিনের অনলাইন সংস্করণে একটি প্রতিবেদনে বলা হয় শেষের খেলা হয়তো শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু এ সপ্তাহে এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে খেলার শেষ হতে সময় নেবে। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়। এ সপ্তাহে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করবে বলে অনেকে ধারণা করেছিলেন। কিন্তু ৪ মার্চ একটি আদালত জবাব দিয়েছেন যে এখনই গ্রেফতার নয়।
অন দ্যা বয়েল শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বুধবার খালেদা জিয়ার মামলার শুনানি এক মাস পেছানো হয়েছে। এ বিলম্বকরণ বিচারিক বিবেচনার থেকে সম্ভবত রাজনীতির সঙ্গেই বেশি জড়িত। ৪ মার্চ তাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জল্পনা-কল্পনা ছিল। এর একদিন আগে সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, জাপানসহ নয়টি দেশের কূটনীতিকরা তার কার্যালয়ে হঠাৎ উপস্থিত হলে পাল্টে যায় হিসেব। এ পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হলে তিনি কার্যত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হবেন। তাই বিচার প্রক্রিয়ার শেষ হওয়া পর্যন্ত সরকার অপেক্ষায় থাকবে বলে মনে করছে ইকোনমিস্ট। এছাড়া নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার গ্রেফতার, যুদ্ধাপরাধের বিচার, অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড, আওয়ামী লীগ নেতার নানা বক্তব্যের বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ রেডিও তেহরানকে বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে, অতীতের মতোই সমসাময়িক পরিস্থিতির একটি বিশ্লেষণ উঠে এসেছে। বছরের শুরুতে রাজনীতিতে যে পরিস্থিতি চলছে, তা শিক্ষাজীবন থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজকর্ম ও জাতীয় জীবনকে প্রভাবিত করছে। একটা ভয়ের দেশে বাস করছি আমরা। ঘর থেকে বের হলেও আতংক তাড়া করছে সব সময়। বিরোধী দলের যে লাগাতার অবরোধ, তা পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চলতে পারে। এ অবস্থা বিশ্লেষণ করেই হয়তো ইকোনমিস্ট তার পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেছে।
কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ রেডিও তেহরানকে বলেন, রাজনীতিতে যে সাংঘর্ষিক অবস্থা চলছে, প্রতিবেদনে সেটাই প্রকাশ পেয়েছে। সরকার ও বিরোধী দল উভয়েই হার্ডলাইনে অবস্থান করছে। কিন্তু উভয়পক্ষকে কিছুটা ছাড় দিয়ে আলোচনায় বসতে হবে। আন্দোলন বন্ধ করতে হবে, আলোচনাও চলবে, এমনটা হলেই পরিস্থিতির উত্তরণ সম্ভব। তা না হলে সরকার বা বিরোধী দল নয়, ক্ষতির মুখে পড়বে দেশ ও জনগণ।
তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে এ পরিস্থিতির উত্তরণ দরকার। সেজন্য উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে। বিদেশীদের পরামর্শ শুনে নয়, পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে নিজেদের উদ্যোগেই রাজনীতিকদের সমঝোতায় আসা প্রয়োজন বলে মনে করেন সৈয়দ আবুল মকসুদ।