৫২ খেলাধুলা ডেস্ক।।
পুল বি-তে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ওয়ার্থ অ্যান্ড লুইস পদ্ধতিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৯ রানে হারাল পাকিস্তান।
আজ (শনিবার) অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুই বল বাকি থাকতে ২২২ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। জবাবে ৩৩ ওভার ৩ বলে ২০২ রানে অলআউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
ব্যাট করতে নেমে শুরুতে কুইন্টন ডি কককে হারিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা খায় দক্ষিণ আফ্রিকা। মোহাম্মদ ইরফানের বলে সরফরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এর পর ডু প্লেসিস এবং হাশিম আমলা ভালো জবাব দিচ্ছিলেন। কিন্তু দলীয় ৬৭ রানের মাথায় দুজনেই বিদায় নিলে বিপদে পরে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২৭ বলে ৩৮ রান করা আমলাকে ওয়াহাব রিয়াজ আউট করার পর ডু প্লেসিসকে ফেরান রাহাত আলী।
এর পর রুশোকেও বেশীক্ষণ থাকতে দেননি ওয়াহাব রিয়াজ। দলীয় ৭৪ রারে মাত্র ছয়ে রানে ফেরেন রুশো। এর পর মিলারকে রাহাত আলী আউট করলে ৭৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ফর্মে থাকা ডিভিলিয়ার্সের সাথে যোগ দেন ডুমিনি। দারুণ খেলতে থাকেন দুজন। কিন্তু আবারও ইরফানের আঘাত। ব্যক্তিগত ১২ রান করে দলীয় ১০৬ রানের মাথায় ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়াহাব রিয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ডুমিনি। তারপর ডেল স্টেইন আর কাইল অ্যাবোটকে নিয়ে ৩৬ ও ৩৪ রানের দুটি জুটি গড়েন অ্যাবি ডি ভিলিয়ার্স।
২৪তম ওভারে ডেল স্টেইনকে সরফরাজের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। ৩০তম ওভারে কাইল অ্যাবটকে ইউনুস খানের ক্যাচে পরিণত করেন রাহাত। এসময় একপ্রান্ত আগলে রেখে মারমুখি ভঙ্গিতে লড়াই করে যান ডি ভিলিয়ার্স। তবে তিনি আউট হওয়ার পর জয়ের স্বপ্ন ঢাকা পড়ে দলটির। ব্যক্তিগত ৭৭ রানে সোহেল খানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। আউট হওয়ার প্রোটিয়া অধিনায়ক করেন ৫৮ বলে ৭৭ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস।
এরআগে টস হেরে ব্যাট করে ২২২ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। বিশ্বকাপে টানা চার ইনিংসে ব্যর্থতার পর পরিবর্তন আনা হয় পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটিতে। নাসির জামশেদের জায়গায় দলে ফিরেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান সরফরাজ আহমেদ। আহমেদ শেহজাদের সঙ্গে ৩০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তিনি।
ডেল স্টেইনের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে শেহজাদের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন দলে ফেরা ইউনুস খান। হারিস সোহেলের চোটে দলে আসা এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান সরফরাজের সঙ্গে গড়েন ৬২ রানের জুটি।
রানআউটে সরফরাজের বিদায়ে ভাঙে ৮ ওভার স্থায়ী জুটি। ৪৯ বলে খেলা সরফরাজের ৪৯ রানের ইনিংস গড়া ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায়।
মিসবাহর সঙ্গে ৪০ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন ইউনুস। এবি ডি ভিলিয়ার্সের বলে রাইলি রুশোর হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ফারহান বেহারদিনের জায়গায় দলে ফেরা জেপি ডুমিনির সঙ্গে পঞ্চম বোলারের কাজটা সারেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক। ৬ ওভার বল করে ৪৩ রান দিয়ে ইউনুসের উইকেটটি নেন ডি ভিলিয়ার্স।
এক প্রান্তে মিসবাহ অবিচল থাকলেও অন্য প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। শোয়েব মাকসুদ (৮), উমর আকমল (১৩) ও শহিদ আফ্রিদির (২২) দ্রুত বিদায়ে শেষ দিকে পাকিস্তানের রানের গতিতে ভাটা পড়ে।
এক সময়ে পাকিস্তানের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ২১২ রান। সেখান থেকে ১০ রান যোগ করতেই শেষ ৫ উইকেট হারায় তারা।
ডেল স্টেইনের বলে সীমানায় মর্নে মরকেলের ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ৫৬ রান করেন মিসবাহ। ক্যারিয়ারের ৪২তম অর্ধশতকে পৌঁছানোর পথে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক অতিক্রম করেন পাকিস্তানের অধিনায়ক।
পেছন দিকে অনেকটা দৌড়ে শেষ মুহূর্তে ঝাঁপিয়ে শেহজাদের দারুণ ক্যাচ নিয়েছিলেন স্টেইন। ফিল্ডিংয়ের মতো বোলিংয়েও দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। ৩০ রান দিয়ে মিসবাহ, আফ্রিদি ও রাহাত আলিকে ফিরিয়ে তিনিই দলের সেরা বোলার। এছাড়া, মরনে মরকেল ও কাইল অ্যাবোট নেন দুটি করে উইকেট।
শ্বাসরুদ্ধকর এ খেলায় ম্যান অব দি ম্যাচ হয়েছেন বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা সরফরাজ আহমেদ। উইকেট কিপিংয়ে রেকর্ড ছয়টি ক্যাচ ধরার আগে ব্যাটিংয়ে খেলেছেন ৪৯ বলে ৪৯ রানের ইনিংস।