৫২ জাতীয় ডেস্ক।।
এবার গুলশান থানায় দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এর আগে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দায়ের করা অপর একটি মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে ছিলেন মান্না।
রিমান্ড শেষে দুপুরে আজ (শনিবার) দুপুরে মান্নাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পুনরায় তার দশদিনের রিমান্ড আবেদন জানায় তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার ওসি (তদন্ত) ফিরোজ কবির। শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল হক।
মান্নার পক্ষে রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান। তিনি আগের মামলাটিতেও জামিনের আবেদন জানান। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অহেতুক রিমান্ডের আবেদন জানানো হচ্ছে। এ মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহের কোনো উপাদান নাই।”
এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে মান্না নিজেই শুনানিতে অংশ নেন। তিনি বলেন, “আমি হাই ব্লাডপ্রেসারের রোগী। চিকিৎসকরাই বলেছেন, আমি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মানসিক চাপ সহ্য করতে সক্ষম। এর বেশি মানসিক চাপ সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই। আমি হার্টেরও রোগী।”
মান্না অভিযোগ করে বলেন, “রিমান্ডে প্রচুর মানসিক চাপ দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে আমি চারঘণ্টা অসুস্থ ছিলাম। ডাক্তারের ব্যবস্থা ছিল না।”
নিজের জীবন নিয়ে তিনি সন্দিহান বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি অতিরিক্ত মানসিক চাপ সহ্য করতে পারছি না। তাই রিমান্ডের অনুমতি না দেয়া ও জামিনের আবেদন জানাচ্ছি।”
রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আদালতের অতিরিক্ত পিপি তাপস কুমার পাল।
সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে ওই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়। গত ৫ মার্চ সন্ধ্যায় গুলশান থানার অপারেশন অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এসআই শেখ সোহেল রানা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে মান্না-খোকার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুমতি চায় পুলিশ। ৪ মার্চ অনুমোদনের পরদিন মামলাটি দায়ের করা হয়।
মান্না-খোকা ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার ঘটনায় ২৩ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে আটক করা হয় বলে দাবি করেন তার পরিবারের সদস্যরা। তবে ওই সময় পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করে।
পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ মান্নাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, সেনা বিদ্রোহে উস্কানি দিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ধানমণ্ডি থেকে মান্নাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
পরবর্তীতে ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তার বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হলে তা মঞ্জুর করেন আদালত।
এক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা মান্না সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিতি পান। এরপর আওয়ামী লীগ থেকে বাদ পড়ে নাগরিক ঐক্য গড়ে তোলেন। ছাত্রজীবনে বামপন্থি সংগঠনে যুক্ত মান্না ডাকসুতে দুই বার ভিপি নির্বাচিত হন। চাকসুতেও জিএস ছিলেন তিনি।