৫২ রাজনীতি ডেস্ক।।
বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ তার ভাষায় বলেছেন, আওয়ামী লীগের ৫ জানুয়ারির ভুয়া নির্বাচনের ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক মহাদুর্যোগের দায় দেশের জনগণ নেবে না। আজ এক বিবৃতিতে একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই ভুলের খেসারত আওয়ামী লীগকেই দিতে হবে।
আজ(রোববার) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন,“রাজনৈতিক সংকটকে আড়াল করতেই আওয়ামী লীগ জঙ্গিবাদের জিকির তুলে দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক মহলকে বিভ্রান্ত করতে চায়। ভয়ঙ্কর এই পুলিশী রাষ্ট্রে জনগণ আইন-আদালতের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।’
বিএনপি নেতা উল্লেখ করেন, সম্প্রতি দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করতে গিয়ে পুলিশ তার পুত্র রেজওয়ানুলকে গুলি করে হত্যা করে; স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে গুলিবিদ্ধ করে।
ফেনীতে ছাত্রদল নেতা আরিফকে গ্রেফতার করতে গিয়ে তার বৃদ্ধ পিতা মফিজুর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করেছে যৌথবাহিনী। এরকম অসংখ্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উল্টো নিহতদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
তিনি উল্লেখ করেন, কোনো অভিযোগ ছাড়াই গতরাতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বাসা থেকে গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির না করায় তার পরিবার ও দল গভীরভাবে আতংকিত ও উদ্বিগ্ন।
বিবৃতিতে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ আরো উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই গতকাল প্রকাশ্য জনসভায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড ঘোষণা করেছেন। ফলেআইন-আদালত, বিচার ব্যবস্থার কোন কার্যকারিতা এরপরে আর অবশিষ্ট থাকে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দেশে শাসন বিভাগ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থায় আইনের শাসন কামনা করা যায় না। বিচার বিভাগে নগ্ন হস্তক্ষেপের ফলে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ন্যায় বিচার প্রত্যাশা তিরোহিত হয়েছে অনেক আগেই।
এ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমেদ উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ১৩টিরও অধিক মামলায় তাকে কোনোদিনও হাজিরা দিতে হয় নি। তাকে সকল মামলা থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। তাছাড়া, আওয়ামী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। আওয়ামী মন্ত্রী-এমপি’দের বিরুদ্ধে দুদকের সকল অভিযোগ ও মামলায় দায়মুক্তি সনদ প্রদান করা হচ্ছে।’
অনুরূপ মন্তব্য করে দৈনিক দিনকাল পত্রিকার সম্পাদক ড:রেজোয়ান সিদ্দিকী বলেন, নিজেদের মামলাগুলি প্রত্যাহার করে নিয়ে কেবলমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই খালেদা জিয়ার মামলা জিইযে রাখা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ড: রেজোয়ান আরো বলেন, মানুষ পুড়িয়ে মারার কথা বলে একতরফাভাবে বিরোধী পক্ষকে দায়ী করা হচ্ছে। অথচ এসব ঘটনায় সরকারী দলের লোকেরা হাতেনাতে ধরা পরলেও পার পেয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা বিরোধী নেতা-কর্মী এমনকি সাধারণ মানুকে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করছে তার জন্যও দায়ী ব্যক্তিদের একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
সালা্হউদ্দিন আহমেদ শাসকগোষ্ঠীকে আবারো স্মরণ করিয়ে দেন, যুক্তির বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ কখনোই শুভ ফল বয়ে আনবে না। র্যাব, পুলিশ, বিজিবিকে রক্ষীবাহিনী স্টাইলে গণহত্যার হুকুম দিয়ে তার দায়ভার প্রধানমন্ত্রী নিজের কাঁধে তুলে নিলেও এরজন্য দায়ী কেউই বিচারের হাত থেকে রেহাই পাবে না।
তিনি শেখ হাসিনাকে আবারো আনুরোধ জানিয়ে বলেন,“স্বৈরতান্ত্রিকতা,একনায়কতান্ত্রিকতা পরিত্যাগ করে গণতন্ত্রের পথে আসুন। দেশকে বাঁচান, মানুষ বাঁচান এবং নিজেরাও বাঁচার চেষ্টা করুন।”