৫২ মফস্বল ডেস্ক, টঙ্গী প্রতিনিধি
টঙ্গীতে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর বেধম মারধর ও টাকা না দিলে হত্যার হুমকি দেখিয়ে মুক্তিপণের টাকা আদায় করেছে অপহরণকারীরা। এঘটনায় ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. মাসুম বিল্লাহ বাদী হয়ে ৭জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫জনকে আসামী করে টঙ্গী মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। মামলার প্রেক্ষিতে অপহরণকারী চক্রের সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন (৪৫), আব্দুর রশিদ (৪৮) মো. মাহমুদুল হাসানকে (৩০) গত সোমবার রাত পৌণে ১২টায় গ্রেফতার করেছে টঙ্গী মডেল থানা পুলিশ। এদের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার মাহমুদুল হাসানকে আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা হাজতে প্রেরণ করা হলেও রহস্যজনক কারণে আনোয়ার ও আব্দুর রশিদকে ছেড়ে দেয়া হয়। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার এজাহার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার দুপুর পৌণে ২টায় ব্যবসায়ী মাসুম বিল্লাহ গাজীপুরস্থ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার জরুরী কাগজপত্র নিয়ে সাতাইশ পরিবহণের একটি বাসে করে ঢাকার আদাবর থানার শেখেরটেকের বাসায় ফিরছিলেন। এসময় তাকে বহনকারী বাসটি টঙ্গী বাজার সেনাকল্যাণ ভবনের সামনে পৌছলে যাত্রীবেশী অপহরণচক্রের সক্রিয় সদস্য আনোয়ার হোসেন, মাহফুজুর রহমান, মাহমুদ হাসান ও নাসির উদ্দিন তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাস থেকে নামিয়ে অজ্ঞাতস্থানের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে ব্যবসার কাজে আনা ৮০ হাজার টাকা, ২টি মুঠোফোন সেট ও তার বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং দফায় দফায় বেধড়ক মারধর করে। পরে ব্যবসায়ীর মুঠোফোন (০১৮৪১৮৬৮৬৮৫) থেকে তার পিতা মো. মাহবুব আলমের কাছে ২লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অন্যথায় তার ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে মুঠোফোনে ছেলের নির্যাতনের আর্তচিৎকার শুনে তিনি (পিতা) অপহরণকারীদের দেয়া দুটি বিকাশ নাম্বারে (০১৮২২৮২২৫৪৩, ০১৭৭৭৭৬৭২০৪) ত্রিশ হাজার টাকা পাঠান। শুধু তাই নয়, অপহরণকারীরা ব্যবসায়ীর পিতাকে বাকী টাকা নিয়ে টঙ্গীর এরশাদনগর (বাস্তুহারা) বস্তির ৫নং ব্লকের রশিদ বেপারীর বাড়িতে আসতে বলে। পরে রাত সাড়ে ৯টায় ব্যবসায়ীর পিতা এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মাসুম বিল্লাহকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
ব্যবসায়ীর পিতা অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তা মাহবুব আলম জানান, ‘টঙ্গী থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর ৩জনকে পুলিশ আটক করলেও ২জনকে রাতেই ছেড়ে দিয়েছে। পুলিশের এই ভূমিকায় আমরা হতাশ হয়েছি।’
এব্যাপারে টঙ্গী মডেল থানার ওসি মো. ইসমাইল হোসেন দুই অপহরণকারীকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘অপহরণকারীচক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’