ঢাকা সফররত ইইউ বাণিজ্য প্রতিনিধি জিল্লুর হাই রাজি বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীদের এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ-জার্মান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিজিসিসিআই) আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে রাজি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা থেকে ‘ব্যক্তিগত অভিমত’ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে ইউরোপ যখন সবচেয়ে বাজে সময় পার করছিল তখনও শুধু বাংলাদেশ ও কাতার প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে।
বাংলাদেশি শার্ট, টি-শার্ট, স্যুয়েটার ও ট্রাউজারের মতো গার্মেন্ট পণ্য ইউরোপে বেশি বিক্রি হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নে এ ধরনের পণ্যের যে চাহিদা তার ২৫ শতাংশই বাংলাদেশ থেকে মেটায়।
বিশ্ব মন্দার দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “২০০৮ সালে যখন ইউরোপে সবার খারাপ দিন যাচ্ছিল তখন চাহিদা কমছিল এবং ক্রেতারা তুলনামূলক কম দামে নির্ভরযোগ্য উৎস খুঁজছিলেন এবং তারা সবাই বাংলাদেশে এসেছিলেন।”
২০১৩ সালে সাভারে রানা প্লাজা ধসে এক হাজারের বেশি পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপী আলোড়নের পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বাজার হারানোর শঙ্কা দেখা দেয়। প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক খাতই বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস।
তবে রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের কারখানা মালিকদের ‘মানসিকতায় পরিবর্তন’ ঘটেছে বলে মনে করেন জার্মান সরকারের সহযোগিতা সংস্থা জিআইজেডের প্রকল্প সমন্বয়ক ম্যাগনাস শ্মিদ।
বাংলাদেশে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা ও কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিতে জার্মানির বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। এই জোটের ২৮ দেশের মধ্যে জার্মানিতেই বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করে।
ইইউ বাণিজ্য প্রতিনিধি রাজি বলেন, “চামড়ায় বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা আছে। কিন্তু নীতি পরিবর্তনে যথেষ্ট কাজ হচ্ছে না।”
রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের হাতে প্রয়োজনীয় তথ্য না থাকাকে একটি বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি।
উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, রং মেশানোয় মরিচের গুঁড়ার একটি চালান ইউরোপে আটকে দেওয়া হয়েছিল। খাদ্য পণ্যে কৃত্রিম রং মেশানোর ব্যাপারে ইউরোপ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি মেনে চলে। রঙ না থাকলে ওই চালান ফেরত যেত না।
“রপ্তানিকারক এবং ক্রেতার মানদণ্ডের মধ্যে একটা ফারাক থেকে যাচ্ছে।”
ঢাকার একটি হোটেলে বিজিসিসিআই সভাপতি সাখাওয়াত আবু খায়েরের সভাপতিত্বে ওই সভা হয়।