নূরুল আমিন,ভোলা প্রতিনিধি ।।
ভোলার মনপুরা থেকে তজুমদ্দিন নৌ-রুটের যাত্রীবাহী সী-ট্রাকটি চলাচল না করায় ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। ডেঞ্জার জোন হিসাবে খ্যাত ভোলা ও পটুয়াখালীর ৮টি নৌ-রুটের মধ্যে ভোলার মনপুরা-তজুমদ্দিন ও মনপুরা-শশীগঞ্জ-এ দুটি নৌ-রুটও ডেঞ্জার জোন হিসাবে খ্যাত। ডেঞ্জার জোন মনপুরা থেকে তজুমদ্দিন নৌ-রুটে দীর্ঘ দিন ধরে যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়ে কিছু দিন চালু আবার কিছুদিন বন্ধ রেখে একটি সী-ট্রাক চলাচল করছে। এ রুটে সী-ট্রাকটি যথাসময়ে চলাচল না করলে যাত্রীরা অন্তহীন দূর্ভোগের কবলে পড়ে।
মনপুরা থেকে তজুমদ্দিন রুটে চলাচলকারী শহীদ শেখ মনি নামের সী-ট্রাকটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ছোট একটি লঞ্চে যাত্রী পারাপার করে আসছিল। গত ১৫মার্চ রবিবার থেকে চলতি বছরের ১৫অক্টোবর পর্যন্ত ৭ মাস ৮টি নৌ-রুটে ছোট লঞ্চ ও ট্রলার চলাচলে বিআইডব্লিউটিএ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় গত ১৫ মার্চ মনপুরা থেকে তজুমদ্দিনের শশীগঞ্জগামী রুটে চলাচলকারী ছোট লঞ্চটি ও বন্ধ হয়ে যায়। এ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় সী-ট্রাক চলাচল করার কথা থাকলেও যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে ডকইয়ার্ডে মেরামতে থাকা শহীদ শেখ মনি নামের সী-ট্রাকটি এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চালু করা সম্ভব হয় নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনপুরা থেকে তজুমদ্দিন নৌ-রুটে প্রায় দু’যুগের মতো চলাচলকারী যাত্রীবাহী সী-ট্রাক বছরের বারো মাস চলাচল করার বিআইডব্লিউটিএ’র নির্দেশনা থাকলেও বর্তমানে সেটি চলছে ৭ মাস। বাকী ৫ মাস সরকারী দলের প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের সহযোগিতায় জীবন ঝুঁকি নিয়ে এ রুটে চলাচল করে ছোট লঞ্চ অথবা ট্রলার।
প্রতি বছর বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ থেকে অনুমতি নিয়ে মনপুরা থেকে তজুমদ্দিন রুটে ৫মাস লঞ্চ অথবা ট্রলার চলাচল করলেও বিগত বছরগুলোতে ৭মাসের মধ্যে এক থেকে দেড়মাস এ রুটে সী-ট্রাক চলাচল করে নি। ফলে সুযোগ বুঝে সরকারী দলের অসাধু চক্রের সহায়তায় এ রুটে ছোট ছোট ট্রলার ও লঞ্চ দ্বিগুন ভাড়া নিয়ে যাত্রী পারাপার করে আসছে।
এদিকে গত ১৫ মার্চ থেকে এ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় সী-ট্রাক চলাচল করার কথা থাকলেও সী-ট্রাকটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে ডকইয়ার্ডে থাকার অজুহাতে ভোলার গুরুত্বপূর্ণ এ নৌ-রুটে বর্তমানে যাত্রী পারাপারে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ১৫ মার্চ থেকে এপার ওপারের যাত্রিরা উত্তাল মেঘনার এ ডেঞ্জার জোন পাড়ি দিতে ছোট ছোট ট্রলারে উঠতে বাধ্য হচ্ছে।
এ রুটে সী-ট্রাকের পরিবর্তে গত ১৫মার্চ পর্যন্ত চালু থাকা লঞ্চটি বন্ধ করে দেয়ায় ১৬মার্চ থেকে স্থানীয় কালু মাঝি নামের এক ব্যাক্তির একটি ট্রলারে করে যাত্রিরা সকাল ১০টায় মনপুরা থেকে তজুমদ্দিন ও বিকাল ৩টায় তজুমদ্দিন থেকে মনপুরায় যাতায়াত করছে। আর এই একটি ট্রলারে যাত্রি ধারন ক্ষমতা কম হওয়ায় জরুরী প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থায় ছোট ছোট ট্রলারে করেও যাত্রিরা জীবন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়,যে কোন সময় বৈরী আবহাওয়ার পাশাপাশি কালবৈশাখী আঘাত হানলে ছোট ছোট ট্রলারে করে পারাপার কারী যাত্রিরা বড় ধরনের নৌ-দূর্ঘটনায় কবলে পড়ার আশংকা রয়েছে।
অপরদিকে ডেঞ্জার জোন খ্যাত মনপুরা থেকে তজুমদ্দিন রুটে বন্ধ হওয়া সী-ট্রাকটি কবে নাগাদ চালু করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন খান এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান।
এ ব্যাপারে মনপুরা থেকে তজুমদ্দিন রুটে চলাচলকারী সী-ট্রাকটির তত্ত্বাবধায়ক ভুট্রু বলেন, এ রুটে চলাচলকারী সী-ট্রাকটি অনেক পুরনো। গত বছর তাড়াহুড়ো করে ডকইয়ার্ড থেকে সী-ট্রাকটি নিয়ে আসায় মেরামতের অনেক কাজ বাকী থেকে যায়। ফলে যাত্রি পরিবহনে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে আমাদের। এবার একটু ভালোভাবে মেরামত কাজ করা হচ্ছে। শীঘ্রই মেরামত কাজ শেষ হলে সী-ট্রাকটি দিয়ে যাত্রি পারাপার শুরু করা হবে।