৫২ খেলাধুলা ডেস্ক ।।
চলতি ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৯ উইকেটে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপে কোনো নকআউট ম্যাচে এটাই দক্ষিণ আফ্রিকানদের প্রথম জয়। অন্যদিকে এ হারের ফলে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিল ১৯৯৬ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন লঙ্কানরা।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ১৩৩ রানে অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানদের ছুড়ে দেয়া ১৩৪ রানের টার্গেট মাত্র ১৮ ওভার খেলেই টপকে যায় প্রোটিয়ারা। প্রোটিয়াদের হয়ে ব্যাটিং সূচনা করতে আসেন হাশিম আমলা এবং কুইন্টন ডি কক। দুই প্রোটিয়া ওপেনার লঙ্কান বোলারদের সহজভাবেই সামলে নিয়ে খেলেন। দু’জনে মিলে ৪০ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে কুলাসেকারার তালুবন্দি হন আমলা। মালিঙ্গার শিকারে সাজঘরে ফেরার আগে তিনি ২৩ বলে ১৬ রান করেন।
হাশিম আমলা ফিরে গেলেও ব্যাটিং ক্রিজে আরেক ওপেনার ডি কক ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৭৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৫৭ বলে ১২টি চারের সাহায্যে তিনি ইনিংসটি সাজান। আর তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা ফাফ ডু প্লেসিস করেন ২১ রান। দু’জনে মিলে ৯৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভার থেকে লঙ্কানদের বিপর্যয় শুরু হয়। ভার্নন ফিল্যান্ডারের জায়গায় সুযোগ পাওয়া আরেক পেসার কাইল অ্যাবট দিনের দশম বলেই কট বিহাইন্ড করেন কুশল পেরেরাকে (৩)। ডেল স্টেইনের করা পঞ্চম ওভারে তিলকারত্নে দিলশান (০) ক্যাচ দেন ডু প্লেসিকে।
চার রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পর দলকে বিপদ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা ও লাহিরু থিরিমান্নে। ২০তম ওভারে ৪১ রান করা থিরিমান্নেকে আউট করে ৬৫ রানের জুটি ভেঙে দেন ইমরান তাহির। চার ওভার পর শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহেলা জয়াবর্ধনেও (৪) এই লেগস্পিনারের শিকার। স্কোর তখন ৮১/৪।
সাঙ্গাকারা ও অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ৩৩ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিল লঙ্কানদের। কিন্তু দলীয় ১১৪ রানে ম্যাথিউসের বিদায়ের পর ধস নামে। মাত্র দুই রানের ব্যবধানে চার উইকেটের পতনে ভীষণ বিপদে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
৩৩তম ওভারের শেষ বলে ম্যাথিউসকে (১৯) ডু প্লেসির ক্যাচ বানিয়ে ডুমিনির হ্যাটট্রিকের সূচনা। নিজের পরের ওভারের প্রথম দুই বলে নুয়ান কুলাসেকারা ও থারিন্ডু কৌশলকে ফিরিয়ে তিনি ভেসে যান দারুণ অর্জনের আনন্দে। এর আগে এই বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক করেছিলেন ইংল্যান্ডের পেসার স্টিভেন ফিন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
অন্য প্রান্তে সতীর্থদের যাওয়া-আসার ‘মিছিল’ দেখে বিরক্ত হয়েই বোধহয় আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টানা চার ম্যাচে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া সাঙ্গাকারা। অ্যাবটের করা ৩৬তম ওভারে দুটো চারসহ ১১ রানও তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু মরকেলকে পরের ওভারে কাট করতে গিয়ে ধরা পড়েন ডিপ থার্ড ম্যানে।
প্রোটিয়াদের হয়ে ইমরান তাহির ৪টি আর জেপি ডুমিনি হ্যাটট্রিক করে ৩টি উইকেট দখল করেন। খেলায় ম্যাচ সেরা হন ইমরান তাহির।