৫২ জাতীয় ডেস্ক ।।
আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি আন্দোলন-নাশকতা থেকে বেরিয়ে আসার একটি পথ পেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি।
রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই আসে না। নির্বাচন করবেন, আবার নাশকতা চালাবেন- তা হয় না।’ তোফায়েল বলেন, নির্বাচনই বিএনপি’র জন্য এক্সিট পয়েন্ট।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি একটা সুযোগ পেল বলে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয়, তারা নির্বাচনে আসবে।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে তা কোন বিশ্বাস থেকে বলছেন-এ প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল বলেন, এ ছাড়া তাদের কোনো উপায় থাকবে না। কারণ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তাদের শিক্ষা হয়েছে।
আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকার দুই সিটি এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে ইতোমধ্যে বিএনপি থেকে ইতিবাচক আভাস পাওয়া গেছে। দলের শুভাকাঙ্ক্ষীরাও নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
তবে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে তিনটি মৌলিক প্রশ্নে দ্বিধায় আছেন বলে জানা গেছে।
এগুলো হচ্ছে: এক. সংসদ নির্বাচনের জন্য টানা কর্মসূচি চালিয়ে হঠাৎ সিটি নির্বাচনে গেলে চলমান আন্দোলনের পরিণতি কী হবে। দুই. নির্বাচনে গেলে দল-সমর্থিত মেয়র, বিশেষ করে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা নির্বিঘ্নে গণসংযোগ চালাতে পারবেন কি না। তিন. এ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে জিতলেও তা আদতে কোনো ফায়দা আনবে কিনা।
তবে বিএনপিতে এমন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও ভেতরে ভেতরে তিন সিটির মেয়র পদপ্রার্থীর নাম অনেকটা চূড়ান্ত হয়ে গেছে বলে দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে।
এর মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রামে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা উত্তরে আরেক উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু ও দক্ষিণে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
তবে মির্জা আব্বাসের ব্যাপারে কিছু সংশয় থাকায় আরেকজনকে বিকল্প খোঁজা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর আগে ঢাকা দক্ষিণ থেকে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলুকে প্রার্থী হিসেবে চিন্তা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা দুজন ওই এলাকার ভোটার না হওয়ায় সে চিন্তা বাদ দেওয়া হয়। অবশ্য প্রার্থীদের পুরো বিষয়টি এখন পর্যন্ত অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে রয়েছে।
তবে, বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আসার ব্যাপারে সরকারী মহলে ভীতিও কাজ করছে বলে মনে হয়।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু গতকাল কুষ্টিয়ায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘একদিকে সিটি নির্বাচনে অংশ নিবেন, অন্যদিকে আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য চালিয়ে যাবেন, এটা হতে পারে না। তাই যতই নির্বাচনে অংশ নেন না কেন মানুষ পোড়ানো ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড থেকে বেগম খালেদা জিয়া রেহাই পাবেন না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে রাজাকার-আলবদর সমর্থিত কোন সরকার আর হবে না। রাজাকার-আগুন সন্ত্রাসী সমর্থক সরকার যাতে আর কোন দিন রাষ্ট্র ক্ষমতায় না আসে সে ব্যাপারে আমাদের সকলকে ঐকমত্যে আসতে হবে।’