৫২ জীব-বৈচিত্র ডেস্ক ।।
নদী মাতৃৃক বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়। এ জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২২টি নদী নানা ভাবে সমৃদ্ধ করেছে। এই নদীগুলো বর্ষাকালে দু-কুল প্লাবিত করে পলির সাথে নিয়ে আসে নুড়ি পাথর। দেশি মিঠা পানির সুস্বাদু মাছ প্রায় সারা বছরই নদীগুলোতে পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর পঞ্চগড়ের পরিবেশকে অত্যন্ত উপভোগ্য করে তুলেছে পাহাড় থেকে নেমে আসা এই নদীগুলো। তাই পাহাড়ের নিচে সমতল এই জেলাটি কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদ পাথর ও বালুতে ভরা। এ জেলার প্রায় সব নদীই নব্যতা হারিয়ে বালুচরে পরিনত হয়েছে। এই সব নদী পাড়ের প্রায় কয়েক হাজার কৃষক মরা নদীর বালুচরকে কৃষি উপযোগী করে ইরি-বোরো ধান, পিয়াজ-রসুন, শাক-সবজি ও আলু-ভুট্টাসহ বিভিন্ন আবাদ লাগিয়েছেন।
এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মহানন্দা, ডাহুক, তিরনই, রনচন্ডি, বেরং, জোড়াপানি, মরাতিস্তা, সাঁও, করতোয়া, তালমা, চাওয়াইপাঙ্গা, কুরুম, পাম, পাথরাজ, ঘোড়ামারা, আতরাই, ভূল্লি,নগর, সিংগিয়া, বহু, রসেয়ারা উৎসমুখ ভারতে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই নদীগুলোর উৎসমুখে বাধ, ব্যারেজ, সুইজগেট, জলাধার, ফিডার, ক্যানেল ও রেগুলেটর নির্মাণ করে তাদের সেচ ও অন্যান্য কাজে পানির চাহিদা মেটাতে নদীগুলোর স্বাভাবিক গতিপথকে আটকে দিয়েছে। ফলে এই নদীগুলো প্রাকৃতিক নব্যতা হারিয়ে প্রায় মরে যাওয়ার মতো অবস্থা। তার ফলে নদীর বুকে গড়ে উঠেছে মরুভূমির মত বিস্তৃত বালুচর। নিচে নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থপানির স্তর। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানান, জেলার তেতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টের পশ্চিম উত্তর কোণে ভারত মহানন্দা নদীর উপর বাধ নির্মাণ করায় এ জেলার অনেক নদীই মরে যাওয়ার দিকে ।
এদিকে মরা নদীর বালুময় বুকে বালু কেটে আল বানিয়ে ইরি-বোরো ধান, পিয়াজ-রসুন, শাক-সবজী ও আলু-ভুট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের চাষ করছে পঞ্চগড়ের চাষীরা। প্রায় সবকটি নদীর জেগে উঠা বালু চরে বর্তমান শুরু হয়েছে চাষাবাদ। যে যতটুকু পারে এমন ব্যবস্থায় তারা চাষ করে বলে জানিয়েছে চাষী আব্দুর রশিদ। চাষী সেকেন্দার বলেন, এক থেকে দেড়ফিট বালি তুলে আল নির্মাণ করা হয়। তারপরই পানি পাওয়া যায়। তাই আলাদা করে সেচ করতে হয়না। এদিকে ভারত কতৃপক্ষ শুস্কমৌসুমে পানি আটকে রেখে যেমন পঞ্চগড় জেলার নদীগুলোকে মরা নদীতে পরিনত করছে তেমনি বর্ষা মৌসুমে বাঁধের মুখ খুলে দিয়ে বন্যায় প্লাবিত করেছে বিস্তৃর্ণ এলাকা। জেলার পরিবেশবিদদের ধারণা এ অবস্থা চলতে থাকলে পঞ্চগড় জেলার প্রাকৃতিক পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে