৫২ জাতীয় ডেস্ক ।।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন ঢাকা দক্ষিণের বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস।
বুধবার পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে স্বামীর পক্ষে গণসংযোগ চালানোর সময় সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, “উপজেলা নির্বাচনেও সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স ছিল কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। এবারও নির্বাচন কমিশন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েনের কথা বলেছে-এটা ‘আইওয়াশ’ মাত্র। আমরা এজন্য সেনাবাহিনী চাইনি। সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েন করতে হবে।”
আফরোজা অভিযোগ করেন, “সিটি নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীর পরাজয়ের আশঙ্কা থেকেই সরকার সমর্থকরা খালেদা জিয়ার ওপর হামলা চালাচ্ছে। সরকার যে ভয় পেয়েছে, খালেদা জিয়ার ওপর বার বার হামলাই তা প্রমাণ করে। সরকার বুঝতে পেরেছে তাদের প্রার্থী জিততে পারবে না, এ কারণেই হামলা করছে।”
তিনি বলেন, “ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস প্রকাশ্যে ভোট চাইতে আসতে না পারলেও ভোটাররা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকেই বেছে নেবে।”
এদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালও সিটি নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার দাবি জনিয়েছেন।
বুধবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ২০ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন উল্লেখ করে তিনি এ দাবি জানান।
আগামী ২৬ এপ্রিলের আগে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়ে তাবিথ বলেন, সেনাবাহিনী দৃশ্যমান হতে হবে। তাছাড়া আমরা আশ্বস্ত হতে পারছি না।
তাবিথ আউয়াল বলেন, “প্রার্থীদের নিরাপত্তা নেই। প্রতিদিনই ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের আটক করা হচ্ছে। পাশাপাশি সরকার দলীয় কর্মীদের কাছে থেকে হুমকিও পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে তিন-তিনবার হামলা করা হয়েছে।”
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যতই হুমকি দেয়া হোক। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে এসেছে। জনগণের রায় নিয়ে নির্বাচিত হলেই এসব হুমকির প্রকৃত জবাব দেয়া হবে।
এদিকে, সিটি নির্বাচন নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু করতে ভোট গ্রহণের ৫ দিন আগে আজ (বুধবার) থেকে সেনা মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একইসাথে ভোট গ্রহণের পর ৫ দিন সেনা মোতায়েন রাখার জোর দাবি জানানো হয়।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান।
আসাদুজ্জামান বলেন, প্রতিনিয়ত খালেদা জিয়ার উপর হামলার ঘটনায় দেশ ও রাজনীতি গভীর সংকটে চলে যেতে পারে। নির্বাচনের সেনা বাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স নয়, বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে মোতায়েন করতে হবে।
বিএনপির মুখপাত্র রিপন অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার রাতে খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলার সময় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকনের উপস্থিতি দেখা গেছে।
তিনি আরো বলেন, যারাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদেরকেই গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য সরকারকেই দায়ি থাকতে হবে। কারণ বিএনপি উত্তেজনার বিপরীতে নয়, বরং প্রশমন ও গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতি করে। এসময় তিনি সরকার দলীয় সমর্থিতদের সিটি নির্বাচনের প্রচারণা রাজনীতিকভাবে মোকাবেলা করার আহবান জানান।