৫২ জাতীয় ডেস্ক ।।
ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজারে কমার্স ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় আটক ডাকাত সাইফুল ও বোরহানসহ ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে আশুলিয়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান মামলাটি করেন। আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে আশুলিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে। সাইফুল আর বোরহানের দেয়া তথ্য ধরেই এখন ডাকাতির ঘটনার তদন্ত চলছে বলে আশুলিয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে, দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও সাত খুনের ঘটনার সঙ্গে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান।
দুপুরে সাভার মডেল থানায় এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান। ডিআইজি জানান, আটক দুজনের দেওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে জানা গেছে, নিছক ডাকাতির উদ্দেশ্যে নয়, জনমনে আতঙ্ক ছড়াতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ডাকাতরা ব্যাংকের ভল্ট লুট করেনি উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এটা ডাকাতদের নতুন কৌশল।
নুরুজ্জামান বলেন, ‘পাঞ্জাবিতে রক্ত লেগেছিল। অর্থাৎ সে (বোরহান) তখন হয়তো নিজে ছুরিকাঘাত করেছে বোঝা যাচ্ছে। ধরা পড়ার পর সে পাগল-টাগল সাজার চেষ্টা করেছে। বিভিন্ন রকম তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। পরবর্তীকালে আমরা তার পরিচয় পেয়েছি। তার কাছে যে সমস্ত ‘জিহাদি’ বইটই পাওয়া গেছে, দেখা যাচ্ছে সে শিবিরের সদস্য।’
অন্যদিকে, ডাকাতির ঘটনার প্রতিবাদে সকাল থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। রাতেই নিহত ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আটজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
এছাড়া, ডাকাতদের হামলায় আহত ১০ জন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আহতদের একজন মানিকগঞ্জের শফিকুল ইসলাম। কাঁচামালের ব্যবসায়ী। লোকজনের সঙ্গে ডাকাতদের প্রতিহত করতে গিয়ে বোমায় তাঁর পা উড়ে গেছে। গত দুই দিনেও অন্যদের মতো তাঁর সহায়তায় এগিয়ে আসেনি কেউ। প্রাণে বেঁচে গেলেও ভর করেছে সংসার ও একমাত্র মেয়ে মাসুমার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ডাকাতদের গুলি ও বোমায় ব্যাংক ম্যানেজার, গ্রাহক ও নিরাপত্তাকর্মীসহ আটজন প্রাণ হারান। ডাকাতদের গুলি, বোমা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছে কমপক্ষে ২০ জন। এছাড়া জনতার গণপিটুনিতে এক ডাকাত প্রাণ হারান।