**কৃষ্ণাকে নিয়েই সাফের কঠিন মিশনে বাংলাদেশ, প্রতিশ্রুতি দেননি বাটলার**
দুই বছর আগে নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের ফুটবলকে আনন্দে ভাসিয়েছিল বাংলাদেশ মহিলা দল। দুই বছর পর ঠিক সেই মাটিতেই শিরোপা ধরে রাখার কঠিন মিশনে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কাল নেপালে যাচ্ছে বাংলাদেশ মহিলা দল।
আজ বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে কঠিন মিশনের আগে নিজেদের প্রস্তুতি ও লক্ষ্য জানালেন দলের ইংরেজী কোচ পিটার বাটলার ও অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। কোচ বাটলার কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি। তিনি বলেন, “খেলোয়াড়দের যদি আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা থাকে, তারা আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারে, তাহলে সাফল্য পাওয়া সম্ভব। তবে আমি আগে থেকে কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে চাইছি না।”
অধিনায়ক সাবিনার মতে, এবারের সাফ কঠিন ও চ্যালেঞ্জযুক্ত হতে যাচ্ছে। “গত সাফে আমরা ভারত ও নেপালকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলাম। গ্রুপ পর্বে ভারতকে হারিয়েছিলাম ৩-০ গোলে। আমার মনে হয়, ভারত, নেপাল এবার আরও বেশি প্রস্তুতি নিয়ে আসবে। এবারের সাফ অবশ্যই কঠিন ও চ্যালেঞ্জযুক্ত হতে যাচ্ছে।”
“মহিলা কোচ” খোঁটা শুনেও সাফ চ্যাম্পিয়ন কোচ বাটলার বলেছেন, তিনি অতীতে ঘুরে তাকাতে চান না। একই কথা বললেন আজও। “আমি অতীতে বাস করি না। হ্যাঁ, দুই বছর আগে শিরোপা জিতেছিলাম। তবে এবার সবকিছু নতুন করেই করতে হবে। এই দলে নতুন কয়েকজন খেলোয়াড় আছে। পুরনো, অভিজ্ঞরা আছে। আমাদের কয়েক ধরনের পরিকল্পনা থাকবে। অন্যরা কী করবে, তারা কেমন দল, এসব নিয়ে ভাবার লাভ নেই। আমাদের যে শক্তি আছে, সে অনুযায়ী খেলতে পারলে সাফল্য পাব বলে আশা করি।”
দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় কৃষ্ণা রানী সরকারকে নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। বুধবার বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ভোরের অনুশীলনে কৃষ্ণা দলে থাকবেন কি না, সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি কোচ বাটলার। আজ সাফের জন্য ২৩ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন তিনি। সেখানে কৃষ্ণার নাম আছে। গত সাফের ফাইনালে এই কৃষ্ণাই নেপালের বিপক্ষে জোড়া গোল করেছিলেন। টুর্নামেন্টে মোট ৪ গোল করেছিলেন।
এবার প্রথমবারের মতো সাফ খেলতে যাচ্ছেন ৯ জন—আফঈদা খন্দকার, মোসাম্মৎ সাগরিকা, ইয়ারজান বেগম, আইরিন খাতুন, মুনকি আক্তার, কোহাতি কিসকু, শাহেদা আক্তার রিপা, মিলি আক্তার ও মাতসুশিমা সুমাইয়া। সাগরিকা গত ফেব্রুয়ারিতে অনূর্ধ্ব-১৯ সাফে ঝড় তুলেছিলেন। গত জুলাইয়ে ভুটানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করেছিলেন। কোচ বাটলারও তার দল নিয়ে সন্তুষ্ট। সাবিনা, সানজিদা, মাসুরা, ঋতুপর্ণা, মারিয়া, মনিকা, রুপনা ছাড়াও নতুনদের নিয়েও তিনি খুব আশাবাদী।
গতবারের শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ কি এবার দলের ওপর বড় চাপ? বাটলার তা মনে করেন না। “আমরা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করব সাফে। আমরা শিরোপা ধরে রাখার মিশনে যাচ্ছি। এটাকে আমরা মোটেও চাপ মনে করি না। ফুটবল আমাদের দলের খেলোয়াড়দের জন্য, আমার জন্য মোটেও চাপ নয়। বরং আনন্দের ব্যাপার। গৌরবের ব্যাপার।”
মেয়েদের সাফ ফুটবল নেপালে ১৭ অক্টোবর কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে শুরু হবে। বাংলাদেশের গ্রুপে আছে ভারত ও পাকিস্তান। ২০ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ পাকিস্তানের বিপক্ষে। ২৩ অক্টোবর দ্বিতীয় ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে।
**বাংলাদেশ দল:**
রুপনা চাকমা
মাসুরা পারভীন
আফঈদা খন্দকার
শিউলি আজিম
শামসুন্নাহার সিনিয়র
নীলুফা ইয়াসমিন নীলা
আইরিন খাতুন
কোহাতি কিসকু
মনিকা চাকমা
মারিয়া মান্দা
স্বপ্না রানী
মাতসুশিমা সুমাইয়া
সানজিদা আক্তার
মুনকি আক্তার
ঋতুপর্ণা চাকমা
শাহেদা আক্তার রিপা
সাবিনা খাতুন
তহুরা খাতুন
শামসুন্নাহার জুনিয়র
কৃষ্ণা রানী সরকার
মোসাম্মৎ ইয়ারজান
মিলি আক্তার
মোসাম্মৎ সাগরিকা