**মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশন কাল খুলছে**
মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশন আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে খুলছে। মেরামতের পর প্রায় তিন মাস পরে স্টেশনটি চালু হচ্ছে।
আজ উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে এক সংবাদ সম্মেলনে মেট্রোরেল পরিচালনা সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ এ তথ্য জানান।
এর আগে প্রায় দুই মাস আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশন চালু করা হয়েছিল। এখন সেখান থেকে যাত্রীরা নিয়মিত যাতায়াত করছেন। আগামীকাল সকাল থেকে মিরপুর-১০ স্টেশন থেকেও স্বাভাবিকভাবে যাত্রীরা চলাচল করতে পারবেন।
আগামীকাল সকাল ১০টায় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবীর খান মিরপুর-১০ স্টেশন পরিদর্শন করবেন বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন দুটি স্থানীয় বাজার থেকে সংগৃহীত যন্ত্র দিয়ে চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে স্টেশন দুটির স্বাভাবিক কার্যাবলী চালু করা সম্ভব হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও পণ্য সংগ্রহ করে বাকি কম গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ছিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে টিকিট বের হওয়া, ভাড়া পরিশোধ করে প্রবেশ ও বের হওয়ার গেট খোলা, স্টেশনে ট্রেনের দরজা সঠিক জায়গায় খোলা এবং স্টেশনের ইলেকট্রনিক পর্দায় ট্রেনের তথ্য সঠিকভাবে দেখানো ও ঘোষণা করা। এই পরীক্ষাগুলো সফল হওয়ায় স্টেশনটি চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ১৮ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ওই দিন বিকেল পাঁচটায় মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর পরদিন মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়। ২০ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডিএমটিসিএলের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেছিলেন, ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন দুটি মেরামত করে পুনরায় চালু করতে প্রায় এক বছর সময় লাগতে পারে।
২৭ জুলাই তখনকার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন ধ্বংস হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এক বছরেও যন্ত্রপাতি এনে এগুলো সচল করা সম্ভব হবে না।’
তবে সরকার পরিবর্তনের পর দুই মাসের মধ্যে কাজীপাড়া স্টেশন চালু করা হয়। তিন মাসের কম সময়ের মধ্যে মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনও চালু হতে যাচ্ছে।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, তৎকালীন সরকারের সময় মেট্রোরেলের এই দুটি স্টেশন মেরামতের জন্য সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছিল। তবে কাজীপাড়া স্টেশন মেরামতে ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন মেরামতের কত টাকা খরচ হয়েছে তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তবে ব্যয় খুবই কম বলে জানা গেছে।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনে স্বয়ংক্রিয় টিকিট বিক্রয় যন্ত্র, কম্পিউটার, ভাড়া পরিশোধের গেট, স্টেশনের ইলেকট্রনিক পর্দা ও কিছু কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিছু সরঞ্জাম ও উপকরণ স্থানীয় বাজার থেকে কেনা হয়েছে। তবে টিকিট কাটার যন্ত্র এবং ভাড়া পরিশোধের গেট স্থানীয় বাজারে পাওয়া যায় না। সেগুলো আমদানি করতে হয় যা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, টিকিট কাটার যন্ত্র ও গেট উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ ও বিজয় সরণি স্টেশন থেকে নেওয়া হয়েছে। এই স্টেশনগুলোতে যাত্রীর চাপ তুলনামূলক কম। সেখানকার একাধিক মেশিন ও গেটের মধ্যে কিছু সরানো হয়েছে। এ ছাড়া উত্তরার মেট্রোরেল ডিপোতে প্রদর্শনকেন্দ্রে থাকা আটটি গেট এনে লাগানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমদানি করে ওই সব জায়গায় গেট ও টিকিট কাটার যন্ত্র বসানো হবে। তবে আমদানি করলেও আগের সরকার যে ব্যয় প্রাক্কলন করেছিল, তত টাকা লাগবে না।