শিশুকে কখন থেকে ডিম খাওয়াতে দেওয়া যাবে?
মায়েরা প্রায়ই নবজাতকদের খাবার নিয়ে চিন্তিত ও বিভ্রান্ত থাকেন। সবাই জানেন যে, শিশুদের ছয় মাস বয়স পর্যন্ত তাদের মায়ের দুধই যথেষ্ট। কিন্তু তারপর থেকে শিশুদের অতিরিক্ত খাবার দরকার হয়। অনেক মা এ নিয়ে অনেক দ্বিধায় পড়ে যান যে, বড়দের খাবার কবে এবং কতটা দেবেন।
ডিমের ক্ষেত্রেও এই প্রশ্নটি অনেকের মনে থাকে। অনেকেরই মনে ভয় থাকে যে, শিশুর ডিমে অ্যালার্জি হতে পারে বা পেট খারাপ হতে পারে। তাই অনেকেই জানতে চান, শিশুদের ডিম খাওয়ানো শুরু করার সঠিক সময় কী?
ডিমের গুরুত্ব
ডিম একটি উচ্চমানের খাবার। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা শিশুর মানসিক বিকাশ এবং শারীরিক গঠনের জন্য অত্যন্ত দরকারী। এতে প্রোটিন ছাড়াও ফসফরাস, পটাশিয়াম, জিংক, ভিটামিন এ, ডি, ই, বি12 এবং আয়রনও রয়েছে। এই সমস্ত উপাদান শিশুর হাড়, দাঁত, ত্বক, স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কতটুকু ডিম দেওয়া উচিত?
ডিম একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। একটি মাঝারি আকারের ডিমে প্রায় 6-7 গ্রাম প্রোটিন থাকে। জন্মের সময় শিশুর ওজন যদি 3 কেজি হয়, তাহলে ছয় মাস বয়সে তার ওজন প্রায় 8 কেজি হওয়া উচিত। এমন ওজনের শিশুর প্রতিদিন প্রায় 14.5 গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন হয়। এই চাহিদার প্রায় 40% শিশু তার মায়ের দুধ থেকে পায়। বাকি 8-9 গ্রাম প্রোটিন তাকে অন্যান্য খাবারের মাধ্যমে পেতে হয়।
ডিম ছাড়াও মাছ, মাংস এবং ডালও প্রোটিনের উৎস। তাই শিশুকে একদিনে একটা পুরো ডিম দিলে সে প্রায় 7 গ্রাম প্রোটিন পাবে। এর মানে হল যে, তার আর অন্য কোনো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার দেওয়ার দরকার নেই। তবে সম্পূর্ণ প্রোটিন শুধুমাত্র ডিম থেকে নেওয়া উচিত নয়। মাছ, মাংস এবং ডাল থেকেও প্রোটিন নেওয়া উচিত।
তাই শিশুকে ছয় মাস বয়স থেকে পুরো ডিম দেওয়া উচিত নয়। পরিবর্তে, অর্ধেক ডিম দিলে তা থেকে তাকে 3-3.5 গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যাবে। দুপুর এবং রাতে 10 গ্রাম করে মাছ বা মাংস দিলে সেখান থেকে প্রায় 4 গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যাবে। বাকি 1-2 গ্রাম প্রোটিন তাকে ডাল এবং সবজি থেকেও পাওয়া যাবে।
দেশি মুরগির ডিম আকারে ছোট হয়। একটি দেশি মুরগির ডিমে প্রায় 3-3.5 গ্রাম প্রোটিন থাকে। তাই ছয় মাস বয়সে শিশুর ওজন যদি 8 কেজি হয়, তাহলে তাকে একটা পুরো দেশি মুরগির ডিম দেওয়া যেতে পারে।
পুরো ডিম কবে দেওয়া যাবে?
যদি শিশুর বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়, তাহলে 9 মাস বয়সের পরে তাকে পুরো ডিম দেওয়া যেতে পারে। কারণ, 9 মাস বয়সে শিশুর ওজন প্রায় 10 কেজি হয়। এই ওজনে সে একটা পুরো ডিম হজম করতে পারবে। এই সময় শিশুর প্রতিদিন প্রায় 18 গ্রাম প্রোটিনের প্রয়োজন হবে।
ডিম খাওয়ানো কি অবশ্যই দরকার?
শিশুর যদি ডিমে অ্যালার্জির কোনো লক্ষণ না থাকে, তাহলে তাকে ডিম খাওয়ানো উচিত। কারণ, ডিমে প্রোটিন ছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান থাকে। এই উপাদানগুলি শিশুর হাড়, দাঁত, ত্বক, স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।