বাংলাদেশের ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার এক বিশাল বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে মন্ত্রী এ বাজেট উপস্থাপন করেন। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি দাঁড়াবে ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ৫.০ শতাংশ। গত অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ছিল ৬৭ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা।
বাজেট বক্তৃতায় এই ঘাটতির কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী জানান, ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে ৩০ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১.৮ শতাংশ) এবং অভ্যন্তরীণ সূত্র হতে ৫৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা (জিডিপি’র ৩.৩ শতাংশ) সংগ্রহ করা হবে।
অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা হতে সংগৃহীত হবে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা (জিডিপি’র ২.২ শতাংশ) এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য ব্যাংক-বহির্ভূত খাত থেকে আসবে ১৮ হাজার কোটি টাকা (জিডিপি’র ১.০ শতাংশ)।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন অর্থমন্ত্রী। দশম জাতীয় সংসদে এটি তার দ্বিতীয় বাজেট। অর্থমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের কারণে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারি নি। দেশে জ্বালাও পোড়াও না হলে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যেত। তার পরও বিশ্বের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের মধ্যে আমরা অন্যতম।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি শতাধিক মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। এসএসসি পরীক্ষার্থীরা সঠিকভাবে পরীক্ষা দিতে পারেনি। এছাড়া বৈশ্বিক অর্থনীতির শ্লথ গতি থাকা সত্ত্বেও দেশে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা কৃষি ও শিল্প খাতে অনেক ভালো কিছু অর্জন করেছি। দেশে বিদ্যুৎ ও খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। শিক্ষাখাতেও অনেক অগ্রগতি হয়েছে।
মুহিত আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলার। আশা করছি ২০১৮ সালে দেশ থেকে অতিদরিদ্র বিতাড়িত করবো। বর্তমানে আমাদের গড় আয়ু ৭০ দশমিক ৭ বছর। এখন আমাদের রিজার্ভ রয়েছে ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
এদিকে, প্রস্তাবিত বাজেটসংসদে উপস্থাপনের আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংসদের কেবিনেট কক্ষে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে বাজেটের অনুমোদন দেয়া হয়।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের এই বাজেটের দুই-তৃতীয়াংশই রাজস্ব খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করেছেন।
ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে অনলাইনে বেচাকেনার ওপর চার শতাংশ মূল্য সংযোজন কর প্রস্তাব করা হয়েছে। তাছাড়া, মোবাইল ফোনের সেবায় পাঁচ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।