বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ব্রিটিশ নাগরিক ও সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানকে ট্রাইব্যুনালের সাজার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেয়ায় আদালত অবমাননার দায়ে গত ১০ জুন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সাজা দেন ট্রাইব্যুনাল-২। তাকে এক ঘণ্টার কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে একমাসের কারাদণ্ডের সাজা দেয়া হয়। পরে এজলাসকক্ষে আসামির কাঠগড়ায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকেন ডা. জাফরুল্লাহ। তবে জরিমানা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উচ্চ আদালতে যান জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
আদালত অবমাননার দায়ে জরিমানার পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারিত সাতদিনের মধ্যে পরিশোধ না করায় গত ১৮ জুন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। অবশ্য এর আগেই ১৬ জুন ওই জরিমানার আদেশ চেম্বার আদালত ৫ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেন। একইসঙ্গে জাফরুল্লাহর আবেদনটি আগামী ৫ জুলাই আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু স্থগিতাদেশের লিখিত কপি না পাওয়ায় ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
রোববার চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশের লিখিত কপি পেয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা স্থগিত করেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২।
এর আগে আজ বেলা ১১টার দিকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিজে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে চেম্বার আদালতের লিখিত আদেশটিসহ আইনজীবী সনদ, অবহিতকরণপত্র এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন।
ব্লগে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ লেখার মাধ্যমে বিচারাধীন বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানকে গত বছরের ২ ডিসেম্বর সাজা দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ৫০ জন বিশিষ্ট নাগরিক একটি বিবৃতি দেন। ওই বিবৃতি ‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রতি কটাক্ষ’ মনে হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল বিবৃতিদাতাদের আচরণের ব্যাখ্যা চায়।
৫০ বিবৃতিদাতার মধ্যে ২৬ জন নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান। আর একজন আগেই বিবৃতি থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন। বাকি ২৩ জনের বিরুদ্ধে গত ১ এপ্রিল অবমাননার রুল জারি করে ট্রাইব্যুনাল-২। ১৪ মে ওই ২৩ জনের দেওয়া জবাবের ওপর শুনানি করে আদালত রায়ের দিন ঠিক করে দেন।
রুলের শুনানিতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাদে বাকি ২২ জন প্রথমবারের মতো এ ধরনের অবমাননা করার কারণে তাদেরকে নিঃশর্ত ক্ষমা করে রুলের নিষ্পত্তি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে তাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন পরবর্তীতে তাদের কোনো মন্তব্য ও বিবৃতির কারণে ট্রাইব্যুনালের যেন মর্যাদা ক্ষুণ্ন না হয়।