ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে দায়ের করা ১০ মামলায় সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার সকালে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম এবং ফরিদ আহমেদ শিবলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই জামিন দেন। আদালতে লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যের্তিময় বড়ূয়া, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির।
এর আগে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ থেকে ২৬ মে ৭ মামলায় জামিন পান লতিফ সিদ্দিকী।
আদালতের আদেশের পর আসামীপক্ষের আইনজীবীরা জানান, ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় এই ১০টিসহ ১৭টি মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে মোট ২৭টি মামলা দায়ের করা হলেও বাকি ১০টি মামলায় কোনো ওয়ারেন্ট জারি না হওয়ায় এখন আর তার মুক্তিতে কোনো বাধা নেই বলে জানান সাবেক এই মন্ত্রীর আইনজীবীরা।
গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে কটূক্তি করেন তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘আমি জামায়াতে ইসলামীর যত বিরোধী, তার চাইতেও হজের ও তাবলিগের বিরোধী। কত ম্যান পাওয়ার নষ্ট হয় তোমরা বিবেচনা করে দেখ। হজের জন্য ২০ লাখ মানুষ আজ সৌদিতে গেছে। এদের কোনো কাজ নাই। এরা কোনো প্রোডাকশনও দিচ্ছে না। শুধু রিডাকশন করছে, শুধু খাচ্ছে। দেশের টাকা নিয়ে গিয়ে ওদের দিচ্ছে। আব্দুল্লাহপুত্র মুহাম্মদ (সা.) কোরাইশদের আর্থিক সুবিধার জন্য হজ উৎসব চালু করেন।’
এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওইসব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দেশ ও দেশের বাইরে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠনগুলো সাবেক এই মন্ত্রী বিচার দাবি করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এছাড়া ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে একের পর এক মামলা দায়ের হয়। এসব মামলায় তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে আদালত। এরপর মহাজোট সরকার মন্ত্রিসভা থেকে তাকে অপসারণ করে।
গত বছরের ২৩ নভেম্বর রাতে ভারত হয়ে দেশে ফেরেন লতিফ সিদ্দিকী। ২৫ নভেম্বর ধানমন্ডি থানায় আত্মসমর্পণ করেন তিনি। পরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে তিনি নিম্ন আদালতে জামিন চাইলে তা না-মঞ্জুর করা হয়। পরে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ ধারা মোতাবেক মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন লতিফ সিদ্দিকী।