রাজধানীর ইস্কাটনে এলোপাতাড়ি গুলি করে দু’জনকে হত্যার ঘটনায় মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনিকে আবারো ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমানের আদালতে রনিকে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে শুনানি শেষে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
এর আগে গত ১ জুন তার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিএমএম আদালত। কিন্তু রিমান্ডে এমপিপুত্র রনি অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসা শেষে ৯ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিন মঞ্জুর করা হয়। পরে শুনানি শেষে রনির জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর।
মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপ-কমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ ও তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি’র উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস জানান, গত রিমান্ডে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল দিয়ে গুলির কথা স্বীকার করেছেন এমপিপুত্র রনি। তিনি বলেছেন, গত ১৩ এপ্রিল মধ্যরাতে রাস্তায় যানজট থাকায় বিরক্ত হয়ে কোমর থেকে পিস্তল বের করেন তিনি। মদ্যপ থাকায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। রাস্তায় এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়েন। মুহূর্তেই রাস্তা ফাঁকা হয়ে যায়। গাড়ি নিয়ে চলে যান তিনি। নিজে জানতেনও না, তার ছোঁড়া গুলিতেই দু’জন মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল রাতে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকায় জ্যামে আটকা পড়লে গাড়ির ভেতর থেকে লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করেন রনি। পরে রনির বন্দুকের গুলিতে বিদ্ধ হয়ে দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার সিএনজি অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী এবং মধুবাগের রিকশাচালক আব্দুল হাকিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত ২৪ মে মামলাটির তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তা ও অন্যান্য সোর্সের মাধ্যমে রনির ব্যবহৃত গাড়িটি শনাক্ত করা হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে ডিবি পুলিশ গত ৩১ মে রনি ও তার গাড়িচালক ইমরান ফকিরকে গ্রেফতার করে। গত ১ জুন দু’জনকে আদালতে পাঠানো হলে ইমরান ফকির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে রনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করলে রিমান্ড আবেদন করে ডিবি পুলিশ।
এদিকে, ঘটনার দিন রনির সঙ্গে গাড়িতে থাকা তার বন্ধু টাইগার কামাল ও জাহাঙ্গীর ১৮ জুন এবং কামাল মাহমুদ ১৯ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করে সাক্ষ্য দেন। তারা তিনজনও সাক্ষ্যে বলেন, রনি তার লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ওই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটান।