বিরোধী জোটের আন্দোলন চলাকালে পুলিশ বোমা মেরে তার দায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর চাপিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, এখন পুলিশ বাহিনী বলছে, তারাই বর্তমান সরকারকে টিকিয়ে রেখেছি।
শনিবার সুপ্রিম কোর্টে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
পুলিশ বোমা না মারলে ২০ দলের তিন মাসের আন্দোলন বন্ধ হতো না দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, “পুলিশ বাসে আগুন দিয়েছে, পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করেছে। সেটা তারা নিজেরাই স্বীকার করেছে। এর দায় চাপিয়ে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়েছে।” এ সময় তিনি গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তি দেয়ার দাবি জানান।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, “বিচার বিভাগ পৃথককরণের জন্য আইনজীবীরা আন্দোলন করেছিলেন। কিন্তু বিচার বিভাগ আলাদা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু স্বাধীন নয়। বিচারকদের আপসারণের ক্ষমতা সংসদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার মানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আরো বেশি নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছে। সেজন্য ন্যায়বিচার নেই। আইনের শাসন নেই।”
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এখন সরকারি দল হলে এক রকম বিচার হয়। আর বিরোধী দল হলে আরেক রকম বিচার হয়। সরকারের দলের লোকজন অপরাধ করলে তাদের শস্তি হয় না। আজ আওয়ামী লীগের সবাই সুফি হয়ে গেছে।”
বিএনপি সন্ত্রাসী দল নয় মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, “ ৯৫-৯৬ সালে আওয়ামী লীগ গান পাউডার দিয়ে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। আমরা নয়, আওয়ামী লীগ হলো সন্ত্রাসী দল।”
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, “সিটি নির্বাচনে প্রচারণার সময় আমাদের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে, গুলি ছোড়া হয়েছে। সেই সন্ত্রাসীদের ছবি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।”
আগামী ১৩ আগস্ট বার কাউন্সিল নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত নীল দলের প্যানেলকে বিজয়ী করতে আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা।
প্রবীণ বিচারপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান টি এইচ খানের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ঢাবির সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, প্রোভিসি আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, মীর মো. নাছিরউদ্দিন, ব্যারিস্টার শাহাজান ওমর, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।