৫২ রাজনীতি ডেস্ক।।
সরকার ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের প্রতিনিয়ত মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার, গুম-খুন, নাশকতা চালিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না দেখে স্বৈরাচারী সরকার এখন তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নিষ্ঠুর নাটক সাজিয়ে তাদের হত্যা করছে বলে মন্তব্য করেছে ২০ দলীয় জোট।
হুশিয়ারি উচ্চারন করে তারা বলেন, “প্রতিটি হত্যাকান্ডের জন্য ক্ষমতাসীনদের অবশ্যই দায়ী থাকতে হবে এবং জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আগামীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
বুধবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জোট নেতারা এসব কথা বলেন জোট নেতারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, “রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনি, মতিঝিলে নড়াইলের পৌর কাউন্সিলর ইমরুল কায়েস ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রদল নেতা মতিউর রহমানকে গুলি করে হত্যার ঘটনা বিচারবহির্ভূত বেআইনি হত্যাকান্ডের সর্বশেষ নিকৃষ্ট উদাহরণ।”
জোট নেতারা বলেন, “এর আগে এই কর্মসূচি চলাকালে নাটোরে ছাত্রদল নেতা রাকিব হোসেন, সিংড়ায় ছাত্রদল কর্মী রায়হান আলী, রাজশাহীতে বিএনপি কর্মী মজিরউদ্দীন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বিএনপি কর্মী মন্তাজ আলী, নোয়াখালীর সেনবাগে যুবদল কর্মী মিজানুর রহমান রুবেল, বেগমগঞ্জে ছাত্রদল কর্মী মহসিনউদ্দীন, সোনাইমুড়িতে ছাত্রদল কর্মী মোরশেদ আলম পারভেজ এবং চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলামকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এই বীর শহীদদের প্রতি আমরা সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জানাই। নেতারা বিচার বহির্ভূত এই বর্বর হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি জানায়।”
বিবৃতিতে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর সদস্যদের এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করার ও বেআইনি হত্যাকান্ড ঘটাবার কোনো অধিকার দেয়া হয়নি। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষভাবে কর্তব্য পালনের গৌরবোজ্জল ঐতিহ্য রয়েছে। কিছু সুবিধাভোগী, দলবাজ ও পক্ষাপাতদুষ্ট কর্মকর্তার কারণে সেই সুনাম ক্ষুন্ন হতে পারে না।
এসময় জোট নেতারা বিচারবহির্ভূত হত্যকাণ্ডের ব্যপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলোরও দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আজ ক্ষমতাসীনদের শীর্ষ পর্যায় থেকে শান্তিরক্ষার নামে দেখা মাত্র গুলি, বিচার ছাড়াই হত্যা এবং দলীয় সন্ত্রাসীদের আইন হাতে তুলে নেয়ার উস্কানি দেয়া হচ্ছে। যৌথ অভিযানের নামে বিভিন্ন জনপদে বিরোধীদল সমর্থকদের ওপর পাইকারী উৎপীড়ন, বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ-লুঠতরাজ এবং পরিবারের সদস্যদের লাঞ্ছিত করার ঘৃণ্য ঘটনা ঘটছে। এসব হানাদারি কার্যকলাপ অবিলম্বে বন্ধ না করলে এর জন্য পরিস্থিতির যদি আরো নৈরাজ্যকর অবনতি ঘটে তবে তার দায়ভার পুরোপুরি হুকুমদাতা ও পরিকল্পনাকারীদেরকেই বহন করতে হবে।
বিবৃতিতে জোট নেতারা বলেন, ভোটের হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনা এবং একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার কায়েমের লক্ষ্যে জনগণের চলমান আন্দোলন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক। এ আন্দোলন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায়ের আন্দোলন।
পূর্বে বিরোধী দলে থাকা কালীন সময়ে নিজেদের সন্ত্রাসী চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটছে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে। সেই সন্ত্রাস-আশ্রিত রাজনীতির ধারকরাই এখন বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে এবং তাদের নির্বাচনী প্রহসনকে বর্জন করার প্রতিশোধ নিতে অন্তর্ঘাত সৃষ্টি করে নারী ও শিশুসহ নিরাপরাধ মানুষকে পেট্টোল বোমা মেরে আগুনে পুড়িয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যা করছে। আর এসবের দায় বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে হত্যাকাণ্ড ও জুলুম-নির্যাতন জোরদার করেছে।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, প্রতারক ও সন্ত্রাসীদের এসব হীন কার্যকলাপ, মায়াকান্না ও মেকি অভিনয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করা যাবে না বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
বিবৃতিতে নেতারা আরো বলেন, নিরপরাধ মানুষের উপর হামলার প্রতিকার ও বিচার অবশ্যই হতে হবে। এরজন্য সত্যিকার অপরাধীদের গ্রেফতার এবং সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় বিচারের মাধ্যমে তাদেরকে শাস্তি দিতে হবে।