৫২ রাজনীতি ডেস্ক ।।
আগামী দুই বছরের জন্য সাইফুর রহমান সোহাগ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও জাকির হোসাইন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
রোববার সংগঠনের ২৮তম জাতীয় সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে তারা নির্বাচিত হন। সাইফুর রহমান সোহাগ দুই হাজার ৬৯০ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে জাকির হোসেন পেয়েছেন দুই হাজার ৬৭৬ ভোট। কাউন্সিল অধিবেশনে ভোট গণনার ফল ঘোষণার পর সাবেক ও বর্তমান নেতাদের উপস্থিতিতে নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পরিচয় করিয়ে দেন বর্তমান সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম।
সমাপনী বক্তব্যে বিদায়ী সভাপতি সোহাগ বলেন, “আজ আমার জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন। ২০১১ সালের ১১ জুলাই ছাত্রলীগের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করে একটি পরিচ্ছন্ন সম্মেলনের মাধ্যমে বিদায় নিচ্ছি।”
নতুন সভাপতি সোহাগ ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের এবং নতুন সাধারণ সম্পাদক জাকির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সোহাগের বাড়ি মাদারীপুর ও জাকিরের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলায়। এর আগে সোহাগ ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও জাকির সহ-সম্পাদক ছিলেন।
অন্যদিকে, নতুন সাধারণ সম্পাদক জাকির ছাত্রলীগের বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। তার আগে জিয়া হল কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেয়ার পর এখন এমফিল করছেন জাকির। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ল’ কলেজে আইন নিয়ে পড়াশুনা করছেন তিনি।
মৌলভীবাজারের জুরী উপজেলায় জন্ম নেওয়া জাকিরের শিক্ষাজীবনের শুরুটা স্কুলে হলেও তিনি অষ্টম শ্রেণির পর মাদ্রাসায় ভর্তি হন। ২০০৫ সালে নরসিংদী জামিয়া মাদ্রাসা থেকে বিজ্ঞান বিভাগে দাখিল পাসের পর ২০০৭ সালে ঢাকার রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি।
ছাত্রলীগের ২৮তম জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে আজ শীর্ষস্থানীয় দুই পদে ভোটগ্রহণ হয়। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে আজ বেলা সাড়ে ১১টায় কাউন্সিলররা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে তাঁদের ভোট দেয়া শুরু করেন। বিকেল ৫টা পর্যন্ত দ্বিতীয় অধিবেশনের পুরোটা সময় ধরে ভোটগ্রহণ চলে। ভোটগ্রহণ শেষে বিদায়ী সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের বক্তব্যের পর সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় শুরু হয় ভোট গণনা। গণনা শেষে রাত ৮টা ৯ মিনিটে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুমন কুণ্ডু।
এর আগে সকাল ১০টা থেকেই দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন ছাত্রলীগের বিদায়ী সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুমন কুণ্ডু, নির্বাচন কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, শেখ রাসেল।
সেখানে তাদের সঙ্গে আলোচনার পরই সাধারণ সম্পাদক পদে ১৪৯ জনের মধ্যে ১৩১ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর শেষ পর্যন্ত সভাপতি পদে ১০ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৮ জন সরাসরি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ছাত্রলীগের তিন হাজার ১৩৮ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন দুই হাজার ৮১৯ জন।
এর আগে গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে ছাত্রলীগের দুদিনের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।