৫২ জাতীয় ডেস্ক ।।
২০২১ সালের মধ্যে তৈরি পোশাকের রপ্তানি আয় পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে নিয়ে যেতে একটি পথনকশা বা রোডম্যাপ করেছে বিজিএমইএ। চট্টগ্রামে ৬-৮ আগস্ট অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ অ্যাপারেল অ্যান্ড সেফটি এক্সপোতে পথনকশাটি ঘোষণা করবে পোশাকশিল্প মালিকদের এই সংগঠন। পরে সেটি বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেবেন সংগঠনের নেতারা।
গত ডিসেম্বরে আয়োজিত ঢাকা অ্যাপারেল সামিটে বিজিএমইএ ২০২১ সালে পোশাক রপ্তানি পাঁচ হাজার কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। এই লক্ষ্যে পৌঁছতে দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ, ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন পরামর্শ ও অভিমত উঠে আসে সামিটে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে অস্ট্রেলিয়ার আরমিট ইউনিভার্সিটির ২১ জনের একটি দল পথনকশাটি তৈরি করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পথনকশায় পাঁচ হাজার কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের চ্যালেঞ্জ, লক্ষ্যটি অর্জনে কী কী অবকাঠামো লাগবে ও কোনটি বাস্তবায়নে সরকারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে তা থাকবে। তা ছাড়া সরকারের কী ধরনের নীতি-সহায়তা প্রয়োজন ও লক্ষ্যটি অর্জিত হলে দেশ কীভাবে উপকৃত হবে, সেসব থাকবে।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তৈরি পোশাকশিল্প একটি পরীক্ষিত খাত। এটি যত এগিয়ে যাবে ততই কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে। সে জন্য পোশাক খাত কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যাবে তার বিস্তারিত পথনকশায় থাকবে। তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে পথনকশাটি ঘোষণা করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদকে দেওয়া হবে। ঢাকায় ফিরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেটি তাঁর হাতে তুলে দেব আমরা।’
রাজধানীর বিজিএমইএ কার্যালয়ে গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠেয় অ্যাপারেল অ্যান্ড সেফটি এক্সপোর বিস্তারিত জানান আতিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি পথনকশার বিষয়েও বলেন। এতে বিজিএমইএর সহসভাপতি নাসিরউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, শহিদউল্লাহ আজিম, এস এম মান্নান, রিয়াজ-বিন-মাহমুদ, সাবেক সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২০২১ সালের লক্ষ্যটি অর্জনে হাতে আছে ছয় বছর। তবে পথনকশাটি করতেই আট মাস পার হয়ে গেল। দেশের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পথনকশাটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কি না জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ইতিমধ্যে কাজ
কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। ব্যাংকঋণের সুদের হার কিছুটা কমেছে। অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র আমদানিতে সরকার শুল্কমুক্ত ঘোষণা করেছে।
এসব উদ্যোগকে কিছুটা ইতিবাচক বললেও গ্যাস-সংযোগ ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রাপ্তি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘কর্মপরিবেশ উন্নয়নে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় কারখানা স্থানান্তর করলে আমরা পুনরায় গ্যাস-সংযোগ পাচ্ছি না।’ তিনি আরও বলেন, পোশাক রপ্তানি নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে। সরকার যদিও মনে করছে, সব কিছু ঠিকঠাক আছে। কিন্তু এ ধরনের মনোভাব থেকে তারা যদি সরে না আসে এবং বাস্তবমুখী উদ্যোগ না নেয়, তবে হুমকির মুখে পড়বে এই শিল্প খাত।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চট্টগ্রামের র্যা ডিসন ব্লু হোটেলে আগামী বৃহস্পতিবার সকালে বাণিজ্যমন্ত্রী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন। তিন দিনের এই প্রদর্শনীর প্রথম দুই দিনে চারটি বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এসব সেমিনারে সরকারের বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী, বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার, অর্থনীতিবিদ, ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, শ্রমিকনেতারা অংশ নেবেন। আর প্রদর্শনীতে সব মিলিয়ে ৭৩টি প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে। এর মধ্যে তৈরি পোশাকের ১৭, ফেব্রিকসের ২, গার্মেন্টস এক্সেসরিজের ২, পোশাকশিল্পের যন্ত্রপাতির ১৮, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের ২৫ ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ৭টি স্টল। আর বিজিএমইএর ২টি।