৫২ জাতীয় ডেস্ক।।
বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও
শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের
আফরোজ চুমকি বলেছেন, ব্যক্তি বা
দল না দেখে অপরাধীকে
বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে
(ওসিসি) ধর্ষণসহ বিভিন্নভাবে
নির্যাতনের শিকার নারী ও
শিশুদের দেখতে যান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন
মাগুরার গুলিবিদ্ধ শিশু ও মায়ের
সঙ্গে এবং উত্তরায় গণধর্ষণের
শিকার কর্মজীবী তরুণীর সঙ্গে
দেখা করেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা
বলার সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের
কথা জানিয়ে মেহের আফরোজ
চুমকি বলেন, নারী ও শিশু
নির্যাতনের গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলো এ
বিষয়ক মন্ত্রণালয় দেখবে বলে
সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা স্বীকার
করতেই হবে- সরকার অন্যায়কে
প্রশ্রয় দিচ্ছে না। এ পর্যন্ত ছয়জনকে
গ্রেফতার করার ঘটনাতেই এটা
প্রমাণ হয়েছে। যারা অপরাধী,
তারা সব সময় তৎপর থাকে। এ ধরনের
ঘটনায় সরকারের পাশাপাশি
সক্রিয় ভূমিকা রাখতে জনগণের
প্রতিও তিনি আহ্বান
জানিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী গুলিবিদ্ধ শিশুটির
মায়ের হাতে ৫০ হাজার টাকার
একটি চেক তুলে দেন।
মাগুরার গুলিবিদ্ধ শিশুটির অবস্থা
সম্পর্কে হাসপাতালের শিশু
সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক
কানিজ হাসিনা বলেন, শিশুটির
উন্নতি হচ্ছে। তবে শঙ্কামুক্ত নয়। গত
কয়েক দিন ধরে বিশেষ উপায়ে
মায়ের বুকের দুধ এনে শিশুটিকে
খাওয়ানো হচ্ছে। খাওয়ার পরিমাণ
বাড়ানো হচ্ছে। কোনো সংক্রমণ
দেখা যায়নি।
প্রতিমন্ত্রী যখন প্রধানমন্ত্রীর
দোহাই দিয়ে বলছেন, ব্যক্তি বা
দল না দেখে অপরাধীকে
বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে
ঠিক তখন খুলনায় নাগরিকরা
বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন
রাকিব নামের ১৩ বছর বয়সী এক
কিশোরকে পৈশাচিক
নির্যাতনের হত্যা করার
প্রতিবাদে।
আজ বিকেলে তার জানাজায়
উপস্থিত হয়ে স্থানীয় সাংবাদিক
আবু তৈয়ব রেডিও তেহরানকে
জানান জনগণের ক্ষোভের কথা।
ওদিকে, সিলেটের কিশোর
রাজনকে পিটিয়ে হত্যার প্রধান
অপরাধী এখনো ধরা-ছোঁয়ার
বাইরে।
এ দিকে বাংলাদেশ মহিলা
পরিষদ আজ মঙ্গলবার এক
বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গত
জুলাই মাসে বাংলাদেশে ৬২ জন
নারী ও শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।
যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার
হয়েছেন ৪১ জন নারী। এদের মধ্যে
যৌতুকের কারণে হত্যা করা
হয়েছে ১৯ জনকে। অ্যাসিড দগ্ধ
হয়েছেন ৪ জন। অপহরণের ঘটনা
ঘটেছে ৬টি। নারী ও শিশু পাচার
হয়েছে ৪ জন। এর মধ্যে
যৌনপল্লিতে বিক্রি করা
হয়েছে ২ জনকে। গৃহপরিচারিকা
নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৪ জন।
এর মধ্যে হত্যা করা হয়েছে দুজনকে।
সংস্থাটির লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদ
১৪টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত
সংবাদের ভিত্তিতে এ
প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
এতে আরো উল্লেখ করা
হয়েছে, জুলাই মাসে সারাদেশে
মোট ৩৬৮ জন নারী বিভিন্নভাবে
নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর
মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ৮৩টি। গণধর্ষণের
শিকার হয়েছেন ১৫ জন। আর ধর্ষণের
পর হত্যা করা হয়েছে ৯ জনকে।
এ ছাড়া বিভিন্ন নির্যাতনের
কারণে ২৬ জন নারী আত্মহত্যা
করতে বাধ্য হয়েছেন এবং নয়জনের
রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বাল্য বিয়ের
শিকার হয়েছে ৩ জন। পুলিশি
নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দু জন।
শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে
৩০ জনকে।