৫২ মফস্বল ডেস্ক ।।
টঙ্গীতে সরকার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে রেলওয়ে জংশনে এবং কামারপাড়া সড়কে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ সরকার দলীয় কতিপয় নেতাকমীরা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে লিজ নেয়ার অজুহাতে বিভিন্ন জেলা ও থানা এলাকা থেকে আসা গরু ব্যবসায়ীদের সাথে প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে বে-আইনি কার্যকলাপ। স্থানীয় থানা পুলিশ সবকিছু জানার পরও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ায় ইজারাদারা আরো বেপোরোয়া হয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কার্যকলাপ।
বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায়, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইপাস টঙ্গীর কামারপাড়া আন্তজেলা সড়কে সরকার ও মন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে স্থানীয় ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আশরাফ আলী ও খোকাসহ কয়েকজন এবং টঙ্গী রেলওয়ে জংশনস্থ রেললাইন সংলগ্ন রেলওয়ে মাঠে রেলওয়ের বাঁধা ও টঙ্গী মডেল থানায় দায়ের করা অভিযোগ উপেক্ষা করে স্থানীয় থানা পুলিশের সহযোগীতায় সরকার দলীয় ৪৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সির নূরুল ইসলাম নুরু ও ৪৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সির হেলাল উদ্দিনসহ কয়েকজন মিলে জেলা প্রশাসনসহ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের রহস্যজনক অনুমতিক্রমে গরুর হাট লিজ নেন।
কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানা এলাকা থেকে বিভিন্ন গরুর পাইকারগন ও সাধারণ গরু ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় রাজধানী ঢাকায় গরু নিয়ে আসার পথে এ-দুটি হাটের ইজারাদারদের নিয়োগকৃত কর্মীরা ১০/১২ জনমিলে লাঠিসোটা নিয়ে সড়ক ও মহাসড়কের দুপাশে দাঁড়িয়ে গরুর বোঝই ট্রাক জোরপূর্বক থামিয়ে এবং মারধরের ভয়ভীতি দেখিয়ে গরু বা ছাগল বাজারে উঠান। কেউ ট্রাক থামাতে বা গরু নামাতে অস্বীকার করলে তারা মোটা অংকের টাকা দাবী করে বলেও একাধিক গরুর পাইকার দাবী করেন।
এব্যাপারে সিরাজগঞ্জ থেকে ৬ টি গরু নিয়ে আসা পাইকার নূর আলম খোকা জানান, গত সোমবার রাত সাড়ে ১১ টায় গরু নিয়ে টঙ্গী ষ্টেশন রোড হয়ে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার পথে টঙ্গীর রেলওয়ে জংশনের আমতলী গরু বাজারের লোকজন আমাদের ট্রাকের গতিরোধ করে এবং হাসান ও কবির নামে দুই ব্যক্তি জোর করে গরু ট্রাক থেকে নামিয়ে ফেলে। পরে বিভিন্ন তদবির করে গরু ফেরৎ নিতে চাইলে তারা গাড়ী প্রতি ৩০ হাজার টাকা দাবী করে এবং আমাদের ভয়ভীতি দেখায়। উক্ত বাজারে গরু বিক্রি করে আমাদের প্রায় ৬০ হাজার টাকা লোকশান হয়েছে। টঙ্গী রেলওয়ে জংশনের আমতলী বাজারে একই দৃশ্য দেখা যায় প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ভোর রাত ৬ টা পর্যন্ত। এদিকে টঙ্গীর কামাড়পাড়া রোডে ইজারাদারগ স্থানীয় পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনে শতকরা ৬ টাকার খাজনা উঠালেও তাদের চক্ষুআড়ালে ৮/১০ টাকা খাজনা আদায়ের অভিযোগ একাধিক ক্রেতাদের। উত্তরার দক্ষিন খান থেকে আসা ক্রেতা আমজাদ জানান, আমি ৬৯ হাজার টাকায় গরু ক্রয় করে ৮ টাকা করে ৫ হাজার ৫ শত ২০ টাকা খাজনা দিয়েছি। এটা সরকারী আইন ভর্হিভূত।
টঙ্গীর আশপাশে প্রায় সব বাজারে শতকরা ৫/৬ টাকা খাজনা ধরা হয়। অপরদিকে বৃষ্টিকে অপেক্ষা করে টঙ্গীর গরু বাজারগুলো বেশ জমে উঠেছে। তবে প্রতিবারের চেয়ে এসব বাজারগুলো গতকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত গরুর দাম চড়া বলেই মনে করছেন সাধারণ ক্রেতারা। আমতলীর গরুর বাজার ইজারা সংক্রান্ত রেলওয়ে ষ্টেশন মাষ্টার হালিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়া সত্বেও রহস্যজনক ভাবে এখানে গরুর হাট বসানো হয়েছে। এখানে জোর যার, মুল্লুকও তার আমরা আর কি করবো ?
এব্যাপারে টঙ্গী রেলওয়ে জংশনস্থ আমতলী গরু বাজারের ইজারাধার কাউন্সিলর হেলালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জোর পূর্বক ট্রাক থেকে গরু নামানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন আমি গরু কিনতে বাজারে এসেছি। এখন ব্যস্থ আছি পরে কথা হবে।
কামাড়পাড়া রোডের গরু বাজার ইজারাধার আশরাফ আলীর মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকা কর্মীদের সাথে কথা বললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, আমাদের এখানে শতকরা ৬ টাকা খাজনা নেয়া হচ্ছে। তাছাড়া স্থানীয় প্রশাসন ও সাংবাদিক ম্যানেজ করতে হয় বুঝতেই পারছেন। আরকিছু আমরা বলতে পারবো না।
এব্যপারে সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে টঙ্গী মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আলী জানান, বিষয়গুলো আমার জানা নেই, গরুর হাটে কেউ এধরনের কার্যক্রম করলে এবং তা প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।