৫২ জাতীয় ডেস্ক ।।
বাংলাদেশ-ভারত উপকূলীয় জাহাজ চলাচল চুক্তির অংশ হিসেবে অভিন্ন পরিচালন পদ্ধতি বা ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর’ (এসওপি) চুক্তি সই হয়েছে। গতকাল রোববার ভারতের দিলি্লতে বৈঠকে ওই চুক্তি সই হয়। ভারতের কেন্দ্রীয় পরিবহন ও জাহাজ চলাচলমন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি এবং বাংলাদেশের নৌ সচিব সফিকুল আলম মেহেদী এই চুক্তি স্বাক্ষরের সময় উপস্থিত ছিলেন।
উপকূলীয় জাহাজ চলাচলের অভিন্ন বিধি সই হওয়ার ফলে বাংলাদেশের জাহাজ চট্টগ্রাম-মংলা বন্দর থেকে সরাসরি চেন্নাই বা কলকাতা বন্দরে যেতে পারবে। এতদিন সিঙ্গাপুর ও কলম্বো হয়ে যেতে হতো। তাতে ব্যয় অনেক বেশি ছিল। একইভাবে ভারত চট্টগ্রাম-আশুগঞ্জ হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে সরাসরি অনেক কম সময়ে ও কম ব্যয়ে পণ্যবাহী জাহাজ পাঠাতে পারবে।
আগে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি বা চিকেন নেক হয়ে পণ্য সরবরাহের জন্য ব্যয় হতো চার হাজার টাকার বেশি। সে ব্যয় কমে দাঁড়াবে দেড় হাজার টাকা। আর সময় ৩০ দিনের পরিবর্তে ১০ দিনে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য সরবরাহ করা যাবে। বাংলাদেশ এর জন্য ট্রানজিট ফি পাবে টনপ্রতি ১৯২ টাকা।
বাংলাদেশের নৌ সচিব সফিকুল আলম মেহেদী ও ভারতের সচিব রাজীব কুমারের উপস্থিতিতে এসওপি স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের অতিরিক্ত সচিব ফকরুল আলম ও ভারতের অমিতাভ কুমার।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর নীতিন গড়কড়ি বলেন, এর পর ভারত থেকে সস্তায় কমলালেবু ও চিনি রফতানি করা যেমন সুবিধা হবে, তেমনি বাংলাদেশ থেকেও ভারতের প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করা সহজ হবে। তিনি বলেন, এর পর থেকে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের ব্যয় ২০ শতাংশ কম হবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নৌ সচিব বলেন, এই চুক্তি স্বাক্ষর সম্ভব হয়েছে শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সহযোগিতায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ককে এক নতুন শিখরে উন্নীত করতে চান।
এদিকে, আজকের দ্বিতীয় দিনের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে যাত্রী ও পর্যটন জাহাজ পরিবহনের সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হবে। এ ছাড়া মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সমঝোতাপত্র বাস্তবায়নের প্রটোকল চূড়ান্ত হওয়া, ট্রানজিট ফি, ব্যাংক গ্যারান্টি, প্রটোকল রুটগুলোর নদীপথ ড্রেজিংয়ের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থার আর্থিক সাহায্য নেওয়া এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন বন্দর নির্মাণ নিয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। এই রুটগুলো হলো- ভারতের হলদিয়া, কলকাতা, পান্ডু, করিমগঞ্জ ও শিলঘাট এবং বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, মংলা, সিরাজগঞ্জ ও আশুগঞ্জ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে পথে কলকাতা থেকে শিলাইদহ যেতেন, সেই পথের পুনরুজ্জীবন ঘটানো হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে জানান।