অলিদুর রহমান অলি, টঙ্গী থেকে।।
নদ-নদীগুলো আমাদের দেশের প্রাণ। এগুলোকে বাঁচাতে হবে। নদ-নদীগুলো না বাঁচলে দেশ অচিরেই মরুভূমিতে পরিণত হবে। নদী দূষণ ও দখলমুক্ত রাখতে হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় প্রশাসন, সরকারি জরিপ সংস্থাকে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। এককভাবে কেউ আন্দোলন করে সফল হতে পারবে না। কলকারখানার বিষাক্ত তরল বর্জ্য নদ-নদীর পানিতে মিশে পানি দূষণের ফলে মাছসহ সব ধরণের জলজপ্রাণীর অস্থিত্ব আজ হুমকির মুখে। নদী দূষণের ফলে বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, তুরাগ, বালু ও বুড়িগঙ্গা নদীর কূলঘেঁষে গড়ে উঠা যেসব কলকারখানাগুলো তাদের বিষাক্ত তরল বর্জ্য ফেলে নদ-নদীর পানি দূষণ করছে তাদেরকে সতর্ক করতে হবে। ইটিপি বিহীন কারখানাগুলোতে পানি শোধনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনিকভাবে বাধ্য করতে হবে। কারখানা নি:সৃত ক্যামিকেল মিশ্রিত দূষিত পানি সরাসরি নদ-নদীতে পড়ে পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। উৎকট গন্ধের কারণে আজ নদ-নদীর পাড় দিয়ে চলাফেরা করা যায় না। নদ-নদীর পানি ব্যবহারের অধিকার সকলের রয়েছে। পানি ব্যবহারের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো একটু আন্তরিক হলেই নদ-নদীর পানি ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠবে।
গতকাল শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে টঙ্গীব্রীজে আয়োজিত তুরাগের ৭১ কি.মি তীরে বিশাল মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সাংবাদিক অলিদুর রহমান অলির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নদী বিশেষজ্ঞ ও পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. এনামুল হক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাষ্ট্রি বীরমুক্তিযোদ্ধা ডা. নাজিম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী পেশাজীবি লীগ গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি শাহআলম ফরাজী, সিরাজউদ্দিন সরকার বিদ্যানিকতন এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওয়াদুদুর রহমান, টঙ্গী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এন্ড কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ মহসিন, ডাঃ বোরহান উদ্দিন অরণ্য, এম শাহীন হোসেন, কাজী মো. সেলিম, মো. সজল ইসলাম, নাজমুল বারী চৌধুরী, মজিবুর রহমান মাস্টার, কবি বদরুল আলম লিটন, প্রভাষক রুহুল আমিন, রফিকুল ইসলাম রিপন, এমরান মির্জা, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মুন্নাফ, নাহিদা ইয়াসমিন, সাংবাদিক এস এম মনির উদ্দিন, শাজাহান শোভন, মো. জাকির হোসেন, অমল চন্দ্র ঘোষ, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচীতে একাত্মতা প্রকাশ করে যুগান্তর স্বজন সমাবেশ টঙ্গী শাখা, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী পেশাজীবি লীগ, সিরাজউদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজ, টঙ্গী ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন টঙ্গী আঞ্চলিক শাখা, রোটার্যাক্ট ক্লাব অব টঙ্গী, সৃষ্টি সেন্ট্রাল স্কুল এন্ড কলেজ উত্তরা শাখা, শুভজন, মানবকণ্ঠ-সেতুবন্ধন, নাট্যভূমি বিভিন্ন রং বেঙয়ের ব্যানার, লিফলেট নিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে।
এদিকে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ সংলগ্ন কামারপাড়া ব্রীজে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন গাজীপুর মহানগর প্রচার সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল ইসলাম, জাফর ইকবাল, মাহমুদ হাসান, বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল টঙ্গী শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন , ডাঃ বাচ্চু মিয়া, লিটু প্রমুখ। আশুলিয়া তুরাগ থানা এলাকায় বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক মো. কালিমুল্লাহ ইকবালের নেতৃত্বে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় নেতা তালুকদার ফরিদ, সমাজকর্মী সেলিম কাজল, নাজমুল হক জিহাদী, মুল্লুক হোসেন, সরোয়ার আলম, শাহনাজ বেগম প্রমুখ।