৫২ জাতীয় ডেস্ক।।
রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ‘অজ্ঞাত’ ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম ইমরুল কায়েস (৪০)। তিনি নড়াইল পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। কায়েস স্থানীয় জামায়াতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু সোমবার ভোরে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনার পর তাকে ‘অজ্ঞাত পরিচয়’ হিসেবে দেখানো হয়। স্বজনদের দাবি, কায়েস গত শুক্রবার থেকেই নিখোঁজ ছিলেন।
কায়েসের স্ত্রীর খালাতো ভাই অ্যাডভোকেট জাহিদুর রহমান জানান, ইমরুলের গ্রামের বাড়ি নড়াইলের দুর্গাপুর উপজেলায়। ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছিলেন। ঢাকা এলে তিনি ওয়ারীর দক্ষিণ মৈশুন্ডি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে এক স্বজনের বাসায় থাকতেন। গত সপ্তাহে ঢাকায় আসেন। গত শুক্রবার নিখোঁজ হন।
তিনি দাবি করেন, রাজনৈতিক কারণে ইমরুলকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন শাখার উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, সোমবার ভোর ৪টার দিকে মতিঝিলের এজিবি কলোনির ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে ৪/৫ জন যুবক সংগঠিত হয়ে নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা করছিল। এমন সময় ডিবি পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। উভয়পক্ষের গোলাগুলির পর অজ্ঞাত পরিচয় ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বাকিরা পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি এবং ৫টি হাতবোমা উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। গোলাগুলিতে পুলিশের ১৭ রাউন্ড পিস্তলের এবং ২৩ রাউন্ড শটগানের গুলি করা হয়েছে। পরে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
অন্যদিকে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মতিয়ার রহমান জানান, পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগসহ ইমরুলের বিরুদ্ধে ৮টি মামলা রয়েছে। এলাকায় তিনি বিভিন্ন সময়ে পুলিশের ওপর বোমা হামলা চালিয়েছিলেন।
তবে নিহতের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস দাবি করেন, তার স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা রয়েছে। গত শুক্রবার এশার নামাজের আগে স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। সেসময় স্বামী বলেন, নামাজের পর তিনি ফোন দেবেন। কিন্তু এরপরই মোবাইল ফোন বন্ধ পান স্ত্রী।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কায়েসের মোবাইল ফোন থেকে একজন ফোন করে জান্নাতুলকে জানান তার স্বামী মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে খোঁজ নিতে বলা হয় তাকে।
জান্নাতুলের দাবি, তার স্বামী শুধু জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণেই পুলিশ দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।