৫২ খেলাধুলা ডেস্ক।।
যশোরে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলতে আসা ছয়টি দেশের খেলোয়াড়দের অভূতপূর্ব নিরাপত্তা দেয়া হবে। এ জন্য প্রত্যেক ফুটবলারকে একজন করে গানম্যান দেয়া হচ্ছে। বিদেশি দলের যাতায়াতের পথে থাকবে পুলিশের বিশেষ প্রহরা ব্যবস্থা।
এমনকি যশোরে অবস্থানকালে স্থানীয় তিনটি আবাসিক হোটেলে বিদেশি খেলোয়াড় ছাড়া অন্য কোনো গ্রাহকের থাকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হোটেলগুলোকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। দর্শক গ্যালারির বাইরে খেলার মাঠও ঘিরে ফেলা হয়েছে গ্রিলের শক্ত বেষ্টনী দিয়ে। স্টেডিয়ামের দেয়াল বেয়ে কোনোভাবেই যেন দর্শকরা গ্যালারিতে ঢুকতে না পারে তার জন্য সব ব্যবস্থা সেরে ফেলেছে পুলিশ বাহিনী। দলগুলোর অনুশীলনের মাঠ যশোর পুলিশ লাইন ও বিজিবি মাঠও মুড়ে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে।
আগামীকাল শুক্রবার যশোর শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে পর্দা উঠবে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের চতুর্থ আসরের। উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে স্বাগতিক বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা ছাড়াও টুর্নামেন্টে অংশ নেবে মালয়েশিয়া, নেপাল, বাহরাইন, মালদ্বীপ ও কম্বোডিয়া। বাংলাদেশ জাতীয় দলের পাশাপাশি অনূর্ধ্ব-২৩ জাতীয় দলও অংশ নিচ্ছে এ টুর্নামেন্টে। সব দলের একটি করে ম্যাচ হবে যশোরের মাটিতে। এরপর ১২ জানুয়ারি থেকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের অবশিষ্ট খেলাগুলো হবে। ২০ জানুয়ারি ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ আসরটি।
গতকাল বুধবার বেলা ১২টায় যশোরের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রতিযোগিতার স্থানীয় সাংগঠনিক কমিটির ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বাদল রায়, সদস্য ফজলুর রহমান বাবলু ও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু।
জেলা প্রশাসক তার ব্রিফিংয়ে জানান, ২০১৪-র ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রীতি ফুটবল ম্যাচের অভিজ্ঞতার আলোকে দুটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। গেট খুলতে বিলম্বের কারণে যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তা সামাল দিতে এবার বেলা ১২টায় দর্শকদের জন্য সাতটি গেট খুলে দেয়া হবে। জাল টিকেট রোধে এবার বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে কৌশলগত কারণে সেসব পরিকল্পনা বলতে নারাজ কর্মকর্তারা। এর বাইরে টিকেটবিহীন কোনো মানুষকে স্টেডিয়ামমুখী হতে দেবে না পুলিশ। ১০টি অফিসিয়াল টিকেট কাউন্টার এবং সাতটি উপজেলা সদরে আজ বৃহস্পতিবার থেকে টিকেট বিক্রি শুরু হবে। চারটি ম্যাচের প্রতিটিতে টিকেট থাকবে ১২ হাজার করে।
পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান জানান, খেলা চলাকালীন চারদিন পৌর এলাকায় ইজিবাইক চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। মাঠে যারা ঢুকতে পারবেন না, তাদের জন্য ঈদগাহ মাঠে বড় পর্দায় খেলা দেখানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বাফুফে সহ-সভাপতি বাদল রায় বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে অংশগ্রহণকারী আটটি দলকেই যশোরের মাটিতে আনছি। এর মধ্য দিয়ে যশোরকে ফুটবলের আন্তর্জাতিক ভেন্যু করার রাস্তায় উঠিয়ে দিয়েছি। যশোরের ফুটবলের ঐতিহ্যের আলোকে এটা আন্তর্জাতিক ভেন্যু হতেই পারে।’ স্থানীয় প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে ‘যশোরের মানুষ যে ক্রীড়াপাগল’ তার প্রমাণ দেখানোর আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচকে সামনে রেখে যশোরে দ্বিতীয় দিনের মতো ঘাম ঝরিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। গতকাল বুধবার বিকালেও যশোর পুলিশ লাইন মাঠে অনুশীলন করে দলটি। এ অনুশীলনে দলের কোচ মারুফুল হকের নির্দেশনায় মামুনুল, এমিলিরা প্রস্তুত হচ্ছেন শ্রীলঙ্কা বধের জন্য।