৫২ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক।।
রাহেলার বয়স ৫ বছর। সুন্দর, ফুটফুটে মেয়ে। কিন্তু ২ চোখে দেখেনা। ২ বছর আগে তার জ্বর এবং পাতলা পায়খানা হয়েছিল, তারপর চোখে ঘা হয়ে চোখ নষ্ট হয়ে যায়। রাহেলার মত এরকম অনেক শিশুই এমন অন্ধত্বের শিকার।
এমন অন্ধত্বের কারণ জ্বরের কারণে শিশুর খাবার রুচি কমে যায়, আবার পাতলা পায়খানার কারণে শরীরের পুষ্টিকর উপাদান শরীর থেকে বের হয়ে যায়, ফলে শরীরে ভিটামিন-এর ঘাটতি দেখা যায় বলে চোখের পানি শুকিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে চোখে ঘা এর সৃষ্টি হয়। একে জেরফথালমিয়া বলা হয়।কোন ধরণের খাদ্য উপাদান প্রয়োজন ষভিটামিন এ হল চোখের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। এটা চোখের বিভিন্ন অংশের আবরনকে রক্ষা করে। এর অভাবে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়। চোখের কালো রাজাতে ঘা হয় এবং পরবর্তীতে চোখ নষ্ট হয়ে যায়।
ষভিটামিন এ-এর সাথে ভিটামিন সি এবং ই এর প্রয়োজনীয়তা আজ বহুলভাবে প্রমাণিত। এদের এক সাথে এন্টিঅক্সিডেন্ট বলা হয়। এসব ভিটামিন বয়সজনিত চোখের দৃষ্টিক্ষয় অনেকাংশে রোধ করে।ষপ্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাদ্যের অভাবে চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, ফলে চোখ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়।ষআাামাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে অনেক শিশুই ভিটামিনএ-এর অভাবজনিত কারণে অন্ধত্ব বরণ করছে। এছাড়াও ভিটামিন এ-এর অভাবে চোখের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ রেটিনা নষ্ট হয়ে যায় বলে প্রথমে রাতকানা এবং পরবর্তীতে শিশু স্থায়ীভাবে অন্ধ হয়ে যেতে পারে।ভিটামিনের অভাবে করণীয় ষভিটামিন-এরঅভাবজনিত চোখের রোগ শিশুদের মাঝে বেশী দেখা যায়। শিশুর জন্মের পর মায়ের দুধেই তার জন্যে সর্বোত্তম খাদ্য। মায়ের শাল দুধে প্রয়োজনীতা সব খাদ্য উপাদান থাকে। তাই যেসকল মায়েরা শিশুকে প্রথম থেকেই বুকের দুধ খাওয়ানোর অভ্যাস করেন সেসব শিশুদের ভিটামিন এর অভাবজনিত অন্ধত্ব অনেক কম হয়।
ষছোটবেলা হতেই শিশুকে সুষম খাদ্যে অভ্যস্ত করতে হবে।ষছোটমাছ, পাকাফল, শাকসবজীতে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে। শিশুকে এসব খাবারে অভ্যস্ত হতে হবে।ষজ্বর এবং পাতলা পায়খানা হলে প্রয়োজনীয় খাবার স্যালাইন এবং সুষম খাদ্য দেয়া প্রয়োজন, যেন শরীরে ভিটামিন এবং লবণের ঘাটতি না হয়।ষশিশু রাতে ঝপসা দেখলে দেরী না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।ষডাক্তারের পরামর্শে ভিটামিন এ সময়মত খাওয়ানোর মাধ্যমে শিশুর অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা সম্ভব।সবচেয়ে বড় কথা ভিটামিন এর অভাবজনিত অন্ধত্ব শুধু সুষম খাদ্যে গ্রহনের মাধ্যমেই প্রতিরোধ করা যায়। এর জন্যে প্রয়োজন প্রচার এবং জনসচেতনতা।
ডাঃ শামস মোহাম্মদ নোমান
চক্ষু বিশেষজ্ঞ
চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল
ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম