৫২ তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক।।
যানজটের কারণে ঢাকার বাসিন্দাদের ৭৩ শতাংশ কোনো না কোনো শারীরিক বা মানসিক অসুবিধায় ভোগেন। যানজট নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। সেমিনারে বলা হয়েছে, শুধু ঢাকা শহরে যানজটের কারণে প্রতিবছর ৩০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়।
ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ মিলনায়তনে (আইইবি) গতকাল রোববার ‘ঢাকা শহরের যানজট: বিষয়, প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে আইইবির পুরকৌশল বিভাগ। সেমিনারের মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান এসব তথ্য তুলে ধরেন। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ঢাকার মোট আয়তনের মাত্র ৬-৭ শতাংশ সড়ক আছে। অথচ একটি আদর্শ শহরের ২৫-৩০ শতাংশ সড়ক থাকতে হয়। ঢাকার একজন বাসিন্দা দৈনিক গড়ে ভ্রমণ করেন ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট, যার মধ্যে দেড় ঘণ্টাই নষ্ট হয় যানজটে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপূর্ত ও গৃহায়ণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ঢাকা নিয়ে আগে যাঁরা পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁরা দূরদর্শী ছিলেন না। তাঁদের পরিকল্পনা ছাড়িয়ে ঢাকা আরও বিস্তৃত হয়েছে। একটি শৃঙ্খলার মধ্যে না এলে ঢাকার যানজট কমানো যাবে না।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, আগামী চার বছরের মধ্যে যানজট কীভাবে সহনীয় পর্যায়ে আনা যায়, সে বিষয়ে কাজ চলছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে হবে। সংকেত বাতি বলছে একটা, ট্রাফিক পুলিশ হাতে দেখাচ্ছেন অন্য কিছু। এ অবস্থা চলতে পারে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ঢাকা নিয়ে কাজ করে—এমন সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় না থাকায় যানজট আরও বাড়ে। মেট্রোরেলের কাজ শুরু হলে ঢাকার যানজটের অবস্থা আরও ভয়াবহ হবে। অন্তত ১৫ দিনের জন্য হলেও ভিআইপি সড়কে একেক দিন জোড়-বিজোড় নম্বর অনুযায়ী যানবাহন চালিয়ে দেখার প্রস্তাব দেন সাঈদ খোকন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) ওমর ফারুক বলেন, যানজটের ক্ষেত্রে ট্রাফিক প্রকৌশল একটি বড় বিষয়। ট্রাফিক প্রকৌশলের সামান্য ভুলের কারণে দীর্ঘদিন ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতানগুলোর গাড়ি রাখার জায়গা না থাকায় সড়কে রাখা গাড়ি যানজট বাড়াচ্ছে।সেমিনারে ঢাকার যানজট নিরসনে কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হয়। আইইবির পুরকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান আলী মাসুদ হায়দারের সভাপতিত্বে আইইবির সভাপতি মো. কবির আহমেদ, আইইবির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সবুর, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।