৫২ মফস্বল ডেস্ক।।
নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইল খানকামোড় এলাকার ‘আশেক আলী ভিলা’য় একই পরিবারের ৫ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনায় মামলার বাদী শফিকুল ইসলামের ভাগ্নে মাহফুজকে গতকাল সোমবার গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের পরদিনই মাহফুজকে সন্দেহজনকভাবে পুলিশ আটক করে। ৫ খুনের মামলা গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইন্স্পেক্টর খায়েরকে। মাহফুজকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।গতকাল সোমবার পুলিশ সুপার কর্মকর্তাদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন।
অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ড.খন্দকার মুহিদ উদ্দিন জানান, অচিরেই মামলার রহস্য উদঘাটন ও অপরাধীরা গ্রেফতার হবে। এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে যারাই থাকুক তারা নিহতদের পূর্ব পরিচিত এবং নিয়মিত তাদের বাসায় যাতায়াত ছিল এটা নিশ্চিত বলা চলে। সাক্ষী যাতে না থাকে এ কারণে শিশু দুটিকে হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়া খাবারের সাথে চেতনানাশক ওষুধ ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে এটাও অনেকটা নিশ্চিত বলা চলে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতরা যে পেশাদার খুনি নয় এটা বোঝা যায়। পুলিশ সুপার বলেন, ২টি বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। একটি হচ্ছে টাকার লেনদেন এবং অপরটি নারীঘটিত। ভাগ্নে মাহফুজের অতীত ঘটনাটি এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন। টাকার লেনদেন এবং নারীঘটিত উভয় ক্ষেত্রেই উভয় পক্ষের (ঋণদাতা নাজমা ও শাহজাহান এবং ভাগ্নে মাহফুজ) ক্ষোভ ছিল পরিবারটির উপর।
মামলার এজাহারে ঢাকার কলাবাগানের নাজমা ও শাহজাহান এবং বাদী শফিকের ভাগ্নে মাহফুজের নাম উল্লেখ রয়েছে। নাজমা এবং শাহজাহানের ব্যাপারে উল্লেখ রয়েছে, তাছলিমা তাদের কাছ থেকে চড়া সুদে বিভিন্ন সময় ১২ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিল। সেই টাকা ফেরত দিতে না পারায় তারা তাছলিমাকে হুমকি দিয়ে আসছিল। তাদের হুমকির কারণে গত ৯ মাস আগে ঢাকার কলাবাগান থেকে নারায়ণগঞ্জে চলে আসে তারা। আর ভাগ্নে মাহফুজের সঙ্গে তার ছোট মামীর (নিহত লামিয়া) একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে ১৫ দিন আগে। ওই ঘটনায় বড় মামী তাছলিমা ভাগ্নে মাহফুজকে জুতাপেটা করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিল। এই দু’টি কারণের যে কোন একটি কারণে খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সদর মডেল থানার ওসি আবদুল মালেক বলেন, পুলিশ তদন্তের স্বার্থে অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ঘটনার পর থেকে পুলিশ নিহত তাছলিমা বেগমের খালাতো ভাই দেলোয়ার হোসেন, শাহাজাদা, ভাগ্নে মাহফুজ, নিহত মোর্শেদের হোসিয়ারির কর্মচারী রাসেল, নয়ন, নজিবুন ও সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
রবিবার রাতে মাহফুজকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে জানা গেছে। মাহফুজের দেয়া তথ্য কতটুকু সঠিক তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তবে কি ভাবে, কারা এ নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে তা পুলিশ এখন নিশ্চিত বলে জানা গেছে। পুলিশের এ সূত্র আশা করছে মামলার মোটিভ ২/১ দিনের মধ্যে বেরিয়ে যাবে। গত শনিবার তাছলিমা, শান্ত, সুমাইয়া, মোশারফ ও লামিয়াকে হত্যার ঘটনা ঘটে।