৫২ জাতীয় ডেস্ক।।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নতুন করে শিল্প কারখানা স্থাপন না করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ভবন তৈরি করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরে বাংলানগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, রাজধানীর তেজগাঁওকে আবাসিক এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করায় এ এলাকায় ভবিষ্যতে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করার অনুমতি প্রদান না করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। গতকাল একনেক বৈঠকে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৭ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয় সেইসাথে এর ব্যয় প্রায় ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ৪ হাজার ৮৩০ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১০ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে জানানো হয় ফ্লাইওভারের পাইল সংখ্যা, লেনথ ও ক্যাপের আকার বৃদ্ধি করা হয়েছে, ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অংশ সমন্বয় করা, ভূমিকম্প সহায়ক উপকরণ সংযোজন করা, র্যাম্প এর প্রান্তসীমা তেজগাঁও পাš’পথ লিংক রোড এফডিসি গেটের পরিবর্তে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা, পরামর্শক সেবার ব্যয়সহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কাজের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় বৃদ্ধির ফলে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়েছে। এজন্য ১ হাজার ২১৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ১ম বার সংশোধনী অনুমোদন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে দুই দফায় প্রকল্পটির মেয়াদ ২ বছর বাড়ানো হয়েছিল। এ বিষয়ে মোস্তফা কামাল জানান, কারিগরি ও কৌশলগত কারণে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার নির্মাণে কিছুটা বেশি সময় লাগছে। ২০১৭ সালের মধ্যে রাজধানীর এ উড়াল সেতুর প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে।
একনেকে ৩৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশের নদীবক্ষের বালিতে মূল্যবান খনিজের উপস্থিতি নির্ণয় ও অর্থনৈতিক মূল্যায়ন শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এ বিষয়ে বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বিভিন্ন অনুসন্ধানে বাংলাদেশের নদীবাহিত বালিতে মূল্যবান খনিজ ও মৌল উপাদানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এ সকল তথ্য বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানির মধ্যে বালি থেকে খনিজ আহরণের আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। এমনকি কয়েকটি বিদেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশের বালি আমদানির ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এজন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, রাসায়নিক ও খনিজ উপাদানের ভূবৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান ও সমীক্ষার মাধ্যমে সরকার এই বালি রপ্তানির জন্য অনুমোদনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। প্রকল্পটি বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিলেট, ঢাকা, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং ভোলায় বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের নদীবক্ষের বালিতে দুর্লভ, মূল্যবান এবং কৌশলগত মৌল ও খনিজের উপস্থিতি সম্পর্কে তথ্য ভাণ্ডার গড়ে উঠবে যা এসকল মূল্যবান সম্পদসমূহ আহরণ ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি সাধারণ বালির দামে অতি মূল্যবান বালি বিক্রয় বা ব্যবহার রোধ করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে ১৩৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে রংপুরে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প, তেজগাঁয়ে ৩৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এলইডি লাইট (সিকেডি) সংযোজন প্লান্ট ইন ইটিএল শীর্ষক প্রকল্প। ১৭৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণের জন্য সুউচ্চ আবাসিক ভবন নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। ৬৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নীলফামারী-জলঢাকা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প।
৬৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল নির্মাণ প্রকল্প। ৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলায় মান্দা শহীদ কামরুজ্জামান টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট স্থাপন প্রকল্প। ৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন সহায়তা (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্প এবং ১১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার বিমান বন্দর উন্নয়ন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্প। এছাড়া একনেকের অবগতির জন্য ৬টি প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণী উপস্থাপন করা হয়।