৫২ মফস্বল ডেস্ক।।
তীব্র শীত গতকাল সোমবারও অব্যাহত ছিল। দেশের বিভিন্নস্থানে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও জ্বরে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। রিপোর্টার, প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর-
গোপালগঞ্জ: গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল গোপালগঞ্জে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান জানিয়েছেন, ‘গোপালগঞ্জের ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ মঙ্গলবার পর্যন্ত বিদ্যমান থাকতে পারে।’
নওগাঁ: জেলায় শৈত্যপ্রবাহে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি মাসে ২ হাজার ৭৯৮ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। গত সপ্তাহে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৮৭ জন ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৭৩৮ রোগী ভর্তি হয়েছে। আক্রান্ত শিশুদের বেশিরভাগের বয়স ৫ বছরের নিচে। সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আনজুমান আরা খাতুন ও সিভিল সার্জন একেএম মোজাহার হোসেন বুলবুল জানান, গড়ে চলতি সপ্তাহে জেলার ১১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং নওগাঁ সদর হাসপাতাল মিলে প্রতিদিন ১৩০ থেকে ১৪০ রোগী ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এসেছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এই সংখ্যা বেশি।
দিনাজপুর ও ফুলবাড়ী: দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৪৫ জন ভর্তি হয়েছে। ফুলবাড়ী উপজেলায় রোটা ভাইরাসে শতাধিক শিশু আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে এক বছরের এক শিশু। ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ৩২ শিশু ভর্তি হয়েছে। গত ২৪ দিনে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে ১০৮ শিশু। ডা. ফজলুর রহমান জানান, প্রতিটি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য টিম কাজ করছে। উপজেলার হাসনপুর খাজাপুর গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ১ বছরের শিশু মুরশিদা খাতুন গত রবিবার মারা যায়।
লক্ষ্মীপুর:তীব্র শীতে লক্ষ্মীপুরে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে চার শতাধিক শিশু। সদর হাসপাতালে প্রতিদিন ৮০/১০০ শিশু বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে শিশু কনসালটেন্ট ডা. মাঈন উদ্দিন জানিয়েছেন। রোগীর স্বজনরা জানান, জেলা সদর হাসপাতাল ছাড়া উপজেলা কমপ্লেক্সগুলোতে তেমন কোনো ওষুধ দেয়া হয় না। নেই কোনো চিকিৎসক।
চুয়াডাঙ্গা: উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে শীত অনেকটা বেশি অনুভূত হচ্ছে।
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): কুয়াশা, তীব্র শীত ও কনকনে বাতাসে গরম কাপড়ের অভাবে চা বাগানের শিশু, বৃদ্ধরা বিপাকে পড়েছে। শিশুরা সর্দি, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম): তীব্র শীতে উপজেলার তিস্তা চরাঞ্চলে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। কাবু হয়ে পড়েছে গবাদি পশু ও পাখি।
কালাই (জয়পুরহাট): উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, থেকে থেকে বৃষ্টি আর তীব্র শৈত্যপ্রবাহে আলুতে ছত্রাকজনিত মড়ক রোগ দেখা দিয়েছে।
গাইবান্ধা: গতকাল বেলা ১টা পর্যন্ত হিমেল হাওয়া ও কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল জেলা। ট্রেন-বাসসহ সকল যানবাহনকে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হয়।