৫২ খেলাধুলা ডেস্ক।।
স্বাগতিক বাংলাদেশ ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াই দিয়ে চট্টগ্রামে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১১তম আসরের পর্দা উঠছে আজ। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও সিলেটের আটটি ভেন্যুতে বিশ্বকাপের ৪৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। বাকি তিন শহরের ভেন্যুগুলোয় খেলা শুরু হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৫০ ওভারের ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ৯টায়। একই দিনে স্থানীয় এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড লড়বে ফিজির বিরুদ্ধে। ফাইনাল হবে ১৪ ফেব্র“য়ারি ঢাকার শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। নয়টি টেস্ট খেলুড়ে ও আইসিসির সাত সহযোগীসহ মোট ১৬টি দেশ চারটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে এবারের বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে।
‘এ’ গ্রুপে রয়েছে: দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়া। ‘বি’ গ্রুপে রয়েছে: পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও কানাডা। ‘সি’ গ্রুপের দলগুলো হলো: ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও ফিজি। ‘ডি’ গ্রুপে রয়েছে: ভারত, নিউজিল্যান্ড, নেপাল ও আয়ারল্যান্ড। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল সুপারলিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। বাকি দল দুটি সুযোগ পাবে প্লেট চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেয়ার। প্রসঙ্গত, নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বিশ্বের অন্যতম ক্রিকেট পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়া এবারের আসরে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রয়েছে। তাতে শেষ মুহূর্তে সুযোগ পেয়েছে আয়ারল্যান্ড।
আজ থেকে বিশ্বকাপের মূল পর্ব শুরু হলেও অংশগ্রহণকারী দলগুলো ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। খেলাগুলো তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হলেও ব্যক্তিগত চমক দেখিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটার। মোট আটটি সেঞ্চুরি এসেছে এসব ম্যাচে। এ ছাড়া পাঁচ উইকেট প্রাপ্তির ঘটনা ঘটেছে আটবার। স্বাগতিক বাংলাদেশ খেলেছে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ জিতেছে ৬৩ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে শিরোপা প্রত্যাশী ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৯৭ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
আয়োজকরা জানিয়েছেন-মাঠ, খেলোয়াড়দের আবাসিক হোটেল ও অনুশীলনের স্থানসহ আশপাশের পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। খেলোয়াড়দের যাতায়াত নির্বিঘ্ন রাখতে নির্দিষ্ট সড়কগুলোতে সাধারণ যানবাহন চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। খেলা চলাকালীন বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখারও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
নতুন প্রতিভা খুঁজে বের করার লক্ষ্যে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রচলন হয় ১৯৮৮ সালে। এ পর্যন্ত প্রতিযোগিতার দশটি আসরে তিনবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া (১৯৮৮, ২০০২, ২০১০) ও ভারত (২০০০, ২০০৮, ২০১০)। এ ছাড়া পাকিস্তান দুবার (২০০৪, ২০০৬) এবং ইংল্যান্ড (১৯৯৮) ও দক্ষিণ আফ্রিকা (২০১৪) একবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান দলটির পাঁচ সদস্য ২০১৪ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আসরে অংশ নিয়েছিলেন। অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ এদের অন্যতম। মিরাজ গতবারও বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে মিরাজ বাহিনীর ধারাবাহিক সফলতার কারণে বাংলাদেশের বর্তমান দলটি নিয়ে প্রত্যাশা বেড়েছে অনেক। প্রতিযোগিতার গত আসরে নিউজিল্যান্ডকে ৭৭ রানে হারিয়ে প্লেট চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ। এর আগে ২০০৬ সালের বাংলাদেশ দলটিও ছিল বেশ শক্তিশালী। ওই দলের অধিনায়ক ছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহমান। এ ছাড়া তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানের মতো তারকারাও বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন ২০০৬ বিশ্বকাপে। তবে দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের। সে আসরে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে দুর্ভাগ্যজনকভাবে হেরে বিদায় নিতে হয় তাদের।