নুরুল আমিন ভোলা প্রতিনিধি ।।
অপহরনকারীদের সনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে নির্দিধায় অপহরনকারীরা তাদের অপহরন কার্য চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সর্বত্র অপহরন আতংক ছড়িয়ে পড়ায় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মাঝে আইনশৃংখলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জানা যায়,চরফ্যাশন পৌর ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা চরফ্যাশন বাজারের থানা রোডের বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক নজরুল ইসলাম হাওলাদার(৪৫) গত ২৪ জানুয়ারি রবিবার বিকাল ৪টার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছে। তার পরিবারের ধারনা চরফ্যাশন বাজার থেকেই অপহরনকারীরা তাকে অপহরন করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে গেছে।তার ০১৭১৬-৩০১৪৪১নম্বরের মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।গত ২৫জানুয়ারি সোমবার এ ঘটনায় চরফ্যাশন থানায় জিডিনং-১০০৪ দায়ের করা হয়েছে। চরফ্যাশন থানার এস,আই জাহাঙ্গীর হোসেন নজরুল ইসলাম হাওলাদার নিখোঁজ হয়েছেন না কি অপহরনের শিকার হয়েছেন তা তদন্ত করে দেখছেন বলে চরফ্যাশন থানা পুলিশ জানিয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এস,আই জাহাঙ্গীর হোসেন জানান,গতকাল বুধবার নজরুল ইসলাম হাওলাদারের মোবাইল ফোন নাম্বারটি কিছু সময়ের জন্য সচল পাওয়া গেছে। তিনি আরো জানান,তার মোবাইল ফোনটি চট্রগ্রামের মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় পাওয়া গেছে। চরফ্যাশনের আলোচিত এ ব্যবসায়ী নিখোঁজ হওয়ায় ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের ধারনা তাকে অপহরন করা হয়েছে।এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। গত ডিসেম্বর মাসে চরফ্যাশন বাজারের ব্যবসায়ী জসিম হায়দার ঢাকা লঞ্চ ঘাট থেকে অপহরনের শিকার হয়েছেন। তার পরিবারের সদস্যরা বিকাশের মাধ্যমে চরফ্যাশন থেকে ১লাখ ৩০হাজার টাকা মুক্তিপন পরিশোধ করলে ঢাকা থেকে অপহরনকারীরা তাকে ছেড়ে দেয়। গত ১১ মাস পূর্বে চরফ্যাশনের বাসিরদোন বাজারের মুদি ব্যবসায়ী শাহজাহান(৪৫) অপহরনের শিকার হয়।
অপহরনকারীরা তাকে চরফ্যাশন থেকে লঞ্চ যোগে ঢাকায় নিয়ে একটি বেড়ী বাঁধের নিকটে একটি ঘরে আটকিয়ে রাখে। পরে অজ্ঞাতস্থান থেকে ৫লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করলে শাহজাহানের পরিবারের পক্ষ থেকে ৩লাখ টাকা মুক্তিপন পরিশোধ করলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। গত ডিসেম্বর মাসে আছলামপুর ২নং ওয়ার্ডের মোমিন(২৬) নামের এক যুবককে চরফ্যাশন টিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে অপহরন করা হয়। অপহরনকারীরা ২টি মোটর সাইকেল যোগে এসে নেশা জাতীয় দ্রব্য মোমিনের মুখে চেপে ধরলে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে লঞ্চ যোগে তাকে ঢাকার নারায়নগঞ্জে নিয়ে আটকিয়ে রেখে অপহরনকারীরা মুক্তিপন দাবী করে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরনকারীরা ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপন আদায় করে তাকে ছেড়ে দেয়।
একই মাসে চরফ্যাশন আয়েশাবাগের এক ধান ব্যবসায়ী চরফ্যাশন মাঝিরহাট বাজারে ধান ক্রয় করতে গিয়ে অপহরনের শিকার হন। ২/৩দিন পর ঢাকা থেকে মুক্তিপনের বিনিময়ে অপহরনকারীরা তাকে ছেড়ে দেয়। বর্তমানে অপহরনের শিকার এ পরিবারগুলো যেমন আতংকে রয়েছে,তেমনি ব্যবসায়ী ও চরফ্যাশন এলাকাবাসীর মাঝে অপহরন আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।এদিকে অপহরনের এ ঘটনাগুলো সম্পর্কে চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) ম,এনামুল হকের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, অপহরনের শিকার এ লোকগুলো অপহরন হয়েছে না কি কোন কারনে নিখোঁজ হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে চরফ্যাশন বাজারের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম হাওলাদার অপহরন হয়েছেন না কি নিখোঁজ রয়েছে তা আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান করছি।তবে এ ব্যাপারে চরফ্যাশন থানায় একটি জিডি হয়েছে বলে তিনি জানান।