৫২ জাতীয় ডেস্ক।।
আবাসিক খাতে গ্যাসের তীব্র সংকটের মুখে রান্নাঘরে এলপি গ্যাস ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেছেন, আবাসিক খাতে গ্যাসের যে সমস্যা, এ সমস্যা থাকবে। যারা আবাসিক গ্যাস ব্যবহার করছেন, তারা ধীরে ধীরে এলপিজিতে চলে যান। কারণ, এলপিজি এখন অ্যাপার্টমেন্টেও ব্যবহার করা যায়। তবে আবাসিক খাতে এখন যে গ্যাস সংকট চলছে, তা আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে কেটে যাবে। গ্যাসের লাইনে কাজ চলছে বলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম হোসেন খোন্দকার বিজ্ঞান ভবন মিলনায়তনে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে নবায়নযোগ্য শক্তি বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার ও নবায়নযোগ্য শক্তিপ্রযুক্তি সরঞ্জামাদির এক প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নসরুল হামিদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শক্তি ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ সৌরশক্তি সমিতি যৌথভাবে তিন দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সৌরশক্তি সমিতির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহতাশাম হোসেন, প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, টেকসই ও নবায়নযোগ্য শক্তি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, বাংলাদেশ সৌরশক্তি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইব্রাহীম। স্বাগত বক্তব্য দেন শক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. সাইফুল হক।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হলো শিল্প এলাকায় প্রথমে গ্যাস সরবরাহ করা। আমরা সেদিকে ধাবিত হচ্ছি, যেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ হয়। সেখানে যেন গ্যাস দেওয়া যায়। আবাসিক খাতে আগামী দিনে সবাই এলপিজিতে চলে যাক, আমরা এটাই চাইছি।
আবাসিকের চেয়ে শিল্পকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা সেটা বলতে চাইছি না। তবে পরিবর্তন হচ্ছে। পরিবর্তনটা কাজে লাগান। এলপিজি
যেন সবার জন্য সাশ্রয়ী হয় এবং দাম যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে, সরকার সে চেষ্টা করছে। আগামী তিন বছরে আমরা চাইছি, আবাসিকের ৭০ শতাংশ যেন এলপিজিতে চলে। এ সময় শিল্প মালিকদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন গ্যাসের চাপ কম। আপনাদের যে পরিমাণ গ্যাস দরকার, আমরা তা দেব। হয়তো চার-পাঁচ মাস সময় লাগতে পারে।
অনুষ্ঠানে নবায়নযোগ্য শক্তিবিষয়ক গবেষণা উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্ট্রাকো গ্রুপের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন এবং ইন্ট্রাকো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ রিয়াদ আলী নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ ছাড়া দেশে নবায়নযোগ্য শক্তি খাতের উন্নয়নে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সৌরশক্তি সমিতির উপদেষ্টা ড. মুহতাশাম হোসেনকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ : গতকাল সংসদের নবম অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ নিশ্চিত হবে। সে জন্য সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াট অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে।
সরকারি দলের এমপি নুরুল ইসলাম ওমরের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে আরও বলেন, বর্তমানে সরকারি খাতে চার হাজার ৮৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৪টি এবং বেসরকারি খাতে দুই হাজার ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সর্বমোট ছয় হাজার ৯৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে।
(সূত্র-সমকাল ।)