৫২ নিজস্ব প্রতিনিধি।।
শেরপুরের শ্রীবরদীতে ‘চিতা প্রজাতির’ একটি বাঘের থাবায় নবনির্বাচিত পৌরমেয়র মো. আবু সাইদ (৩০) আজ বুধবার সকালে গুরুতর আহত হয়েছেন। শহরের জালকাটা এলাকার একটি সেচযন্ত্রের ঘরে আশ্রয় নেওয়া চিতাবাঘটিকে দেখতে গেলে সেটি তাঁর ওপর হামলা চালায়। মেয়রকে উদ্ধার করতে গিয়ে আহত হন দুজন।
পরে উত্তেজিত জনতার পিটুনিতে চিতাবাঘটির মৃত্যু হয়। আহত মেয়রকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।বন বিভাগ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোরে শ্রীবরদীর সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকা থেকে একটি চিতাবাঘ লোকালয়ে চলে আসে। সেটি পৌর শহরের জালকাটা এলাকার ফকির আলীর সেচযন্ত্রের ঘরে আশ্রয় নেয়। এ খবর পেয়ে উৎসুক জনতা সেখানে যান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মেয়র আবু সাইদও সেচযন্ত্রের ঘরের সামনে যান। এরপর অতর্কিতে চিতাবাঘটি তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। থাবা দিয়ে মুখের ডান পাশের গালের মাংস উপড়ে ফেলে। এ সময় উত্তেজিত জনতা লাঠিসোঁটা নিয়ে পিটুনি দিয়ে চিতাবাঘটি মেরে ফেলে। মেয়রকে উদ্ধার করতে গিয়ে নাদের (৫০) ও আজিজুল (৪৫) নামে দুজন আহত হন।
গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়রকে প্রথমে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শেরপুরের সিভিল সার্জন মো. আনোয়ার হোসেন আজ বিকেল তিনটার দিকে বলেন, চিতাবাঘের থাবায় মেয়র আবু সাইদের মুখের ডান পাশ, মুখ, গাল, কান ও মাথায় রক্তাক্ত জখম হয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে তাঁকে ময়মনসিংহে পাঠানো হয়েছে।
উত্তেজিত জনতা মৃত চিতাবাঘটি নিয়ে জনতা পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে ঝুলিয়ে রাখে। পরে উপজেলা প্রশাসন সেটিকে জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করে।
শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক মো. রেজাউল করিম বলেন, এটি ‘চিতাবাঘ’ প্রজাতির। ধারণা করা হচ্ছে, এটি ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে শ্রীবরদী পৌর শহরের লোকালয়ে চলে এসেছিল। মানুষের উপস্থিতি দেখে এবং মেয়র আবু সাইদ চিতাবাঘের খুব কাছে চলে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এটি তাঁর ওপর হামলা চালায়। ময়নাতদন্তের পর চিতাবাঘটিকে জেলা বন বিভাগের একটি স্থানে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এস আলম বলেন, এ ঘটনায় শ্রীবরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার প্রক্রিয়া চলছে।