৫২ তথ্য প্রযু্ক্তি ডেস্ক।।
সৌরজগতে আরো একটি নতুন গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবী থেকে ৫ থেকে ১০ গুণ বড় সম্ভাব্য ওই গ্রহটির নাম দেয়া হয়েছে ‘প্ল্যানেট নাইন’ বা নবম গ্রহ।
বুধবার অ্যাস্ট্রনমিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির মহাকাশ বিজ্ঞানী মাইকেল ব্রাউন ও কন্সটানটিন ব্যাটিগিন দাবি করেছেন, সৌরজগতের নবম গ্রহ পাওয়ার ব্যাপারে তারা খুবই শক্তিশালী প্রমাণ পেয়েছেন। প্লুটোর কক্ষপথ থেকে নতুন এ গ্রহের অবস্থান বেশ পেছনে। তবে তারা এখনও সরাসরি গ্রহটি দেখেননি।
বিজ্ঞানীরা জানান, নতুন এই গ্রহ বর্তমানে নেপচুন থেকে কয়েক শ কোটি মাইল দূরের একটি কক্ষপথে পরিভ্রমণ করছে। তবে তারা এও বলছেন, গ্রহটির অস্তিত্ব নিশ্চিত করার মতো কোনো সরাসরি পর্যবেক্ষণ এখন পর্যন্ত করা হয়নি। সৌরজগতের দূরবর্তী বিভিন্ন বস্তুর চলাচল বিশ্লেষণ করে তারা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
কম্পিউটার মডেলের ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা এ দাবি করছেন। তবে এ-সংক্রান্ত গবেষণার প্রধান বিজ্ঞানী কনস্টানটিন বেটিজেন নতুন গ্রহটির অস্তিত্বের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।
কনস্টানটিন বেটিজেন বলেন, ‘গত ২০ বছরে সৌরজগতের বাইরে গ্রহের অনুসন্ধানে আমরা বেশ সফল হয়েছি। সবচেয়ে সাধারণ যে গ্রহগুলো রয়েছে, সেগুলো আমাদের পাওয়া বস্তুর মতোই, যার ভর প্রায় ১০টি পৃথিবীর সমান। এটি বেশ উত্তেজনার।’
গবেষকরা বলছেন, সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ প্রায় বৃত্তাকার পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করলেও সম্ভাব্য এই গ্রহ প্রদক্ষিণ করছে অনেক বেশি উপবৃত্তাকার পথে এবং সূর্যকে একবার পুরো প্রদক্ষিণ করতে এর সময় লাগে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার বছর।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি প্লানেট নাইন’র অস্তিত্ব সত্যিই থেকে থাকে, তাহলে এটা খুবই বড়। পৃথিবীর চেয়ে এর ব্যাস দ্বিগুণ থেকে চারগুণ বেশি হতে পারে। আর সৌরজগতে পঞ্চম বৃহত্তম গ্রহের মর্যাদা পাবে এটি। আকার-আকৃতিতে এর থেকে এগিয়ে থাকবে বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন।
বিজ্ঞানীরা আরও বলছেন, সুর্য থেকে দূরত্ব খুব বেশি হওয়ার কারণেই হয়তো গ্রহটিতে আলো পৌঁছায় খুবই কম। ফলে একে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে। এমনকি খুব শক্তিশালী টেলিস্কোপেও এটি ধরা পড়বে কি না, সন্দেহ আছে।
যদি ‘প্লানেট নাইন’র অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়, তাহলে সৌরজগতের মডেল আবারও নতুন করে সাজাতে হবে বিজ্ঞানীদের। এর আগে ২০০৬ সালে একবার তাদেরকে এ কাজ করতে হয় গ্রহের তালিকা থেকে প্লুটোকে বাদ দেয়ার সময়। সে বছর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রনমিক্যাল ইউনিয়ন নতুন করে গ্রহের সংজ্ঞা নির্ধারণ করায় তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায় সৌরজগতের সাবেক এই নবম গ্রহ।