৫২ মফস্বল ডেস্ক।।
গাজীপুরে চলছে জুয়ার রাজত্য, মধ্যরাতে সুন্দরীদের নাচে জেগে ওঠে বন।
শাল-গজারী ও লতাপাতা ঘেরা ছায়া সুনিবীড় এক মনোরম পরিবেশের নাম ঐতিহ্যবাহী ভাওয়ালের বনভূমি। যার মধ্যমনি ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থিত এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক।
যেখানে রাত পোহালেই স্থানীয় ও দেশের দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য পযর্টকরা এসে ভীড় জমায়।বার্ষিক শিক্ষা সফর ও বনভোজনের নির্ধারিত স্থান আর বহু নাটক, সিনেমা, রূপকথা ও গল্প গানের রাজকুমার ও রাজকুমারীদের নির্বাসিত জীবনের দৃশ্য ধারনের ও ভাওয়াল রাজার ঐতিহাসিক পরগণার সেই ভাওয়ালের বনভূমি জুড়ে দর্শনার্থীদের আকর্ষণীয় বিনোদন কেন্দ্রের নিরাপদ স্থানটি এখন আর আগের মতো নিরাপদ নেই।
জুয়াড়ীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে আজ ভাওয়ালের বনভূমি। বিনোদনের নামে নর্তকীর রগরগে নগ্ন্য নৃত্য পরিবেশনা যেন অসভ্যতা আর অশ্লীলতার সীমা ছাড়িয়ে নির্লজ্জতার শেষ প্রান্তে পৌচেছে।
যাত্রা, সার্কাস ও মেলার নামে ভাওয়ালের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসন ও সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের নাম ভাঙ্গিয়ে চলছিল অশ্লীলতা। তার আশ পাশে গড়ে উঠেছে মাদকের অনেক ছোট-বড় আখড়া। এসব কে কেন্দ্র করে এলাকায় বেড়ে গেছে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা।
এসব জুয়া,অশ্লীলনৃত্য,চুরি,ছিনতাই, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন করতে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে জুয়ারোদের আস্থানা ভাংতে থাকে।ভাওয়াল বনের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তার ২০০ গজ পশ্চিমে জুয়ারো আরিফের আস্থানা।অনেক মসজিদ,মাদ্রাসা ও এলাকার জন সাধারনের প্রশ্ন আরিফের খুটির জোর কোথায়? পাশে গড়ে উঠা আরও তিনটা জুয়া, অশ্লীলনৃত্য বন্ধ করে দিতে সক্ষম হয়েছে প্রশাসন।কিন্তু দিনে ভাঙ্গার কাজ করতেছে যেমন তেমনি আবার রাতের বেলাই চলছে ঠিকমতন আরিফ জুয়ারোর,জুয়া,অশ্লীলনৃত্য।
ভাওয়ালের দূর্গম বন উজার করে যেন স্থায়ীভাবে গড়ে তোলা হয়েছে জুয়ার আখড়া। আমন্ত্রিত জুয়াড়ীদের গাড়ি পার্কিং এর জন্যও রয়েছে উজার করা বনভূমির বিশাল একটি অংশ।সন্ধ্যা হলেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তার দক্ষিন পাশে আসরের মূলগেটে লাল-সবুজ বাতির ঝলকানি আর শত শত টিউব লাইটের আলোকিত রাস্তা পেরিয়ে অতিথিরা চলে যায় জুয়ার রাজ্যে।
সেখানে গেলে সামনেই চোখে পড়ে যাত্রা-হাউজির মঞ্চ।রাত ১২ টা থেকেই শুরু হয় অশ্লীলতা আর জুয়ার রাজত্ব, জুয়াড়িদের আকর্ষণে বলা হয়, কলতি, টু এন্ড থ্রি-টুয়েন্টিথ্রি, বিশ্ব সুন্দরী- এইটটি থ্রি, দাদুর ঘরে চোর-এইটটি ফোর, জ্যাম এন্ড ড্রাইভ-নাম্বার ফাইভ, অফিসিয়াল টাইম-নাম্বার নাইন, লাভ ইজ হেভেন-টুয়েন্টি সেভেন।
হাউজি মঞ্চের পাশেই ওয়ান-টৈন বোর্ড বসিয়ে চলছে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা।সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আরিফের নেতৃত্বে রাজেন্দ্রপুর স্পটে ওয়ান-টেন জুয়ার বোর্ড একটি, তাছাড়া চরকি, বৌ ও পট জুয়ার বোর্ড ১টি করে ৩টি।এক দিকে রাত যতই গভীর হতে থাকে অপর দিকে জুয়ার আসর আর অসভ্য অশ্লীলতা ততই জমতে থাকে।
আশ-পাশের নেশার আখড়া থেকে মদ, গাজা ও ইয়াবায় আসক্ত হয়ে কেউ খেলায় মেতে উঠে আবার কেউ খেলায় পকেটের সব টাকা হেরে নিঃশেষ হয়ে নেশায় মাতাল হয়ে বাসায় ফিরে।এসব জায়গায় শেষ রাতে নর্তকীর রগরগে নগ্ন নৃত্য পরিবেশনা যেন যুব সমাজকে নারীর প্রতি অশ্লীল আচরণে বাধ্য করতে উৎসাহ প্রদান করে থাকে।
এসব অসামাজিক কার্যলাপের কারনে ভাওয়াল বনভূমি এখন যেন গা শিউরে উঠা এক আতঙ্কের বনভূমি।সাধারণ পথচারী, গার্মেন্টস শ্রমিক কেউ উপার্জনের টাকা নিয়ে এসব এলাকার রাস্তা-ঘাট দিয়ে নিরাপদে বাসায় ফিরবে এই ভরসা নেই। পথচারী মেয়ে-ছেলে ও নারী শ্রমিকরা ভোগছেন চরম নিরাপত্তাহীনতায়। দর্শনার্থীদেরও আগের মতো এসব স্থানে আর দেখা যায় না। জুয়া আসর ও অশ্লীল নৃত্য একের পর এক ভাঙ্গার পরও জুয়ারো আরিফ বিরোতি হিন বাবে পুলিশ প্রশাসনের চোখকে ফাকি দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন জুয়ার আসর ও অশ্লীল নৃত্য ।
এই ব্যপারে হোতাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ীর আই সি নাজমুল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন আমি এই বিষয়ে কিছুই জানিনা, আপনি আমার উদ্ধোতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলুন।
জয়দেবপুর থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আমি এব্যপারে সঠিক জানিনা , তবে যদি হয়ে থাকে আমি এখনি খোঁজ নিয়ে থানা থেকে ফোর্স পাঠাচ্ছি।