৫২ জাতীয় ডেস্ক।।
সমাজের উপর সংবাদ মাধ্যমের প্রভাব অনেক, তাই আমাদের সংবাদ মাধ্যমের আরো দ্বায়িত্বশীল ভুমিকা রাখতে হবে।
দুই শিশু সন্তান আলভী ও অরণির লেখাপড়া ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে, নিজেই তাদের হত্যা করেছেন মা মাহফুজা আক্তার জেসমিন। বৃহস্পতিবার তিনি এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন দাবি করেছে র্যাব । হত্যার এমন কারণ বিশ্বাসযোগ্য নয় পরিবারের সদস্যসহ অনেকের কাছে। এ স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শিশুদের বাবা আমান উল্লাহ।
এ মামলায় জেসমিনকে ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত। রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, দুই শিশুহত্যার অন্য কোনো কারণ বা ইন্ধন আছে কি না, সে বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
র্যাব জানায়, সোমবার বনশ্রীর বাসায় দুই সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন জেসমিন। প্রথমে খাবার খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে মারা যাওয়ার দাবি করা হলেও ময়না তদন্তে শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রমাণ মেলে। এরপর বাবা, মা, খালাসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে র্যাব। এরপরই তাদের কাছে মায়ের স্বীকারোক্তি, সন্তানের লেখাপড়া ও ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগের কারণেই হত্যা করেছেন তিনি। তবে তা মানতে নারাজ শিশুদের খালা আফরোজা মালেক। এ ঘটনাকে রহস্যময় ও সাজানো নাটক মনে করছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে মনোবিজ্ঞানী ড. মেহতাব খানম গনমাধ্যমকে বলেন, আমারও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে, মা তার দুই সন্তানকে এভাবে হত্যা করেছেন। এত বড় দুটো বাচ্চাকে এত অল্প সময়ে কিভাবে হত্যা করলেন তিনি। তাছাড়া পরিবারটিকেও সাধারণ বলে মনে হচ্ছে। এ শিশুরা নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে, পড়াশুনা করছে, গৃহশিক্ষক আসছেন। আর এমন কি ঘটলো যে মা নিজেই দুই সন্তানকে হত্যা করবেন। তাদের মধ্যে কোন দাম্পত্য কলহ ছিল কি না, সেটাও স্পষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারছে না। আর কলহের কারণে সন্তানকে হত্যা করা হবেই বা কেন? সবকিছু মিলিয়ে হত্যাকাণ্ডটিকে রহস্যময় বলেই মনে করছেন তিনি।
শিশুহত্যার সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারে গণমাধ্যমকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহবানও জানান এ মনোবিজ্ঞানী। এমন ঘটনার ফলাও প্রচার শিশুদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিশুরা এখন তাদের বাবা-মাকে বলছে, আমরা কি তোমাদের কাছেও নিরাপদ নই? এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার ও প্রকাশে সামাজিক ও মনস্তাত্বিক দিক বিবেচনায় নিতে গণমাধ্যমের প্রতি আহবানও জানান তিনি।