৫২ রাজনীতি ডেস্ক ।।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শুনানো হয়েছে।
বুধবার সকাল ১০ টায় তাকে পরোয়ানা পড়ে শুনানো হয়। পরোয়ানা শুনে রিভিউ করবেন বলে জানিয়েছেন জামায়াতের এই নেতা।
এর আগে সকাল ৯ টা ২০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে নিজামীর মৃত্যু পরোয়ানা ওই কারাগারে নিয়ে আসা হয়। সকাল ৯ টা ২০ মিনিটে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ এর সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক পরোয়ানা গ্রহণ করেন।
তিনি জানান, সকাল ৯টা ২০ মিনিটে তার কারাগারে মৃত্যু পরোয়ানা ও আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি এসে পৌছায়। পরে সকাল ১০টায় মতিউর রহমান নিজামীকে তার মৃত্যু পরোয়ানা ও পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি পড়ে শুনানো হয়। পরে তিনি নিজে পরোয়ানা দেখে তাতে সই করেন।
জেলা সুপার আরও জানান, মৃত্যু পরোয়ানা শোনার পর মতিউর রহমান নিজামী স্বাভাবিক ছিলেন। তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করবেন বলে জানিয়েছেন। এ জন্য তিনি তার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলবেন।
এ রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে নিজামী ১৫ দিন সময় পাবেন। রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে নিজামীর ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার জাহাঙ্গীর কবীর সাংবাদিকদের জানান, বুধবার ভোর সোয়া ৫ টার দিকে নিজামীর মৃত্যু পরোয়ানাটি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারগারের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহালের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই পরোয়ানা মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে আজ কাশিমপুরে পাঠানো হয়।
এর আগে গত ৬ জানুয়ারি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা, পাবনার রূপসী, বাউশগাড়ী ও ডেমরা গ্রামের প্রায় ৪৫০ জনকে হত্যা ও ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ এবং ধুলাউড়া গ্রামে ৩০ জনকে হত্যায় নেতৃত্ব ও সম্পৃক্ততার অপরাধে নিজামীকে দেয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগ।
উল্লেখ্য, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন নিজামীকে গ্রেফতার করে আইনশৃংখলা বাহিনী। একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ২০১২ সালের ২৮ মে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে জামায়াত আমিরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হয়। ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন নিজামী। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর আপিলের শুনানি শুরু হয়। ১১ কার্যদিবস শুনানি শেষে ৮ ডিসেম্বর মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। ৬ জানুয়ারি আপিলের রায় ঘোষণা করা হয়।