সালমান খানের সিনেমা থেকে শুরু করে একের পর বিগ বাজেট সিনেমা ফিরিয়ে দিচ্ছেন দীপিকা পাড়ুকোন। এর নেপথ্যের কাহিনী নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদন বলা হয়েছে, কিছুদিন আগে সালমান খানের ‘সুলতান’ সিনেমায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা রোলের প্রস্তাব এসেছিল দীপিকা পাড়ুকোনের কাছে। ২০১৭ সালে সিনেমাটি রিলিজ হওয়ার কথা ঠিক হয়ে আছে। কিন্তু দীপিকা সোজা ‘না’ করে দিলেন।
সালমানের রাগ হওয়াই স্বাভাবিক। শোনা যাচ্ছে, দীপিকার ওপর বেশ বিরক্তই হয়েছেন সালমান। যাঁরা দু’জনেরই ঘনিষ্ঠ তাঁরা মনে করছেন খুব শিগগিরই কোনো পার্টিতে মুখোমুখি হলে সালমান মুখ ঘুরিয়ে নেবেন দীপিকাকে দেখে।
আর একটা ব্যাপার হচ্ছে, সালমান নিজের মতো করে যে ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারেন তা হল, শাহরুখের শিবিরের সদস্য বলেই এই সিনেমায় কাজ করতে চাইছেন না দীপিকা। কেননা এখানে শুধু একটা সিনেমার ব্যাপার নয়। এর আগেও অন্য একটা সিনেমাতে কাজ করার জন্য সূরয বারজাট্টাকে দিয়ে দীপিকার কাছে প্রস্তাব পাঠান সালমান। সেবারও দীপিকা না করে দেন। তাই বলা যেতেই পারে, সালমানের শত্রু তালিকার নবতম সংযোজন দীপিকা।
সালমানের পর আসা যাক করণ জোহরের কথায়। তাঁর সঙ্গেও সম্পর্কটা ভালো জায়গায় নেই দীপিকার। করণের ‘শুদ্ধি’ সিনেমায় কাজ করার কথা ছিল দীপিকার। শোনা যাচ্ছিল, এ ছবিতে কাজ করবেন হৃতিক রোশন। কিন্তু এই নামটা শোনার পর থেকেই নাকি ছবিটা করতে গাঁইগুঁই শুরু করে দেন দীপিকা।
শেষটায় বলে দেন কাজ করবেন না। কারণ হিসেবে বলে দেন, ডেট নেই, তাই কাজটা করতে পারবেন না। এ রকম উত্তরে কারো খুশি হওয়ার কথা নয়। করণও হননি। বিশেষ করে করণ যখন দেখলেন তাঁর চাওয়া ডেটগুলোতে দীপিকা নিজের বয়ফ্রেন্ড রণবীর সিংয়ের সঙ্গে ‘বাজিরাও মাস্তানি’তে কাজ করছেন, তাঁর বিরক্ত হওয়া তো স্বাভাবিক।
সাম্প্রতিক সময়ের কথা বাদ দিয়ে একটু পেছনের কথা ধরলে বলা যায়, বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বিভিন্ন সিনেমায় ‘না’ করে নিজের শত্রু বাড়িয়ে ফেলেছেন দীপিকা। শাহরুখের ‘জাব তাক হ্যায় জান’ সিনেমাটিতেও তো কাজ করার কথা ছিল দীপিকার।
কিন্তু শেষটায় তিনি না করেন। আর তখন রোলটা যায় অনুস্কা শর্মার কাছে। কিন্তু কেন এই ছবিটা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন দীপিকা সেটা তখন জানা যায়নি। সম্প্রতি জানা গেছে, সমস্যাটা ছিল সিনেমাটিতে ক্যাটরিনা কাইফের উপস্থিতি।
সেটার কারণেই নিজেকে সরিয়ে নেন দীপিকা। তাছাড়া ক্যাটরিনার রোলটা তাঁর রোলের থেকে অনেক বড়ও ছিল। তাই তিনি ছিলেন নারাজ।
উল্লেখ্য, ক্যাটরিনা আর দীপিকা পরস্পরকে দু চোখে দেখতে পারেন না। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, ইডেন গার্ডেনে আইপিএল-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কথা। একই স্টেজে পাশাপাশি বসে থেকেও কেউ কারো সঙ্গে একটা কথাও বলেননি।
কেউ কারো দিকে ভুল করেও মুখ ঘোরাননি। কারণ রণবীর কাপুরকে নিয়ে তখন তাঁদের ঠান্ডা লড়াই চলছিল। ক্যাটরিনার জন্যই তো দীপিকাকে ‘চিট’ করেছিলেন রণবীর!
এবার আসা যাক `রয়`-এর কথায়। এটি আর একটা সিনেমা যার ব্যাপারে প্রোডিউসারদের মুখের ওপরেই ‘না’ করে দিয়েছিলেন দীপিকা। তড়িঘড়ি নতুন নায়িকার খোঁজে বেরোতে হয়েছিল তাঁদের। শেষপর্যন্ত রাজি করানো হয় জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজকে।
হতে পারে, রণবীর হয়তো তেমন কিছু মনে করেননি, কিন্তু প্রোডিউসারদের তো ভালো লাগার কথা নয় ব্যাপারটা। লাগেও নি। দীপিকার ব্যাপারে তাঁদের রাগের কথা খোলাখুলিই বহু মানুষকে বলেছেন দুই প্রযোজক ভূষণ কুমার আর দিব্যা খোসলা কুমার।
আর ‘ধূম থ্রি’-এর বেলায় হতে পারে ক্যাটরিনা আছে বলে দীপিকা ওতে কাজ করতে চাইলেন না, কিন্তু এমন বাজেটের একটা বিগ ব্যানার সিনেমা, বিপরীতে স্বয়ং আমির খান, এমন ছবির কাজ কেউ ফিরিয়ে দিতে চায়! আমির খানও এই ছবির কাজ ফেরানোর ব্যাপারে দীপিকার সিদ্ধান্তটাকে মোটেই ভালোভাবে মেনে নিতে পারেননি।
আর ‘কিক’-এর বেলায় একটা স্পেশ্যাল গানের জন্য পর্দায় আসার ডাক দেওয়া হয়েছিল দীপিকাকে। সেটাও তো তিনি মুখের ওপর ‘না’ করে দিলেন। কারণ তখন কিছুদিনের মধ্যেই শাহরুখের সঙ্গে তাঁর ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ রিলিজ করবে যাতে তাঁর একটা গান রয়েছে বার নর্তকী হিসেবে। সুতরাং এ রকমই একটা গানে ‘কিক’-এ কাজ করাটা ভালো হবে না মোটেই। দীপিকার এ সিদ্ধান্তে শাহরুখ খুশি হতে পারেন, কিন্তু সালমানের মুখ হয়েছে গম্ভীর!
বক্স অফিস বিশেষজ্ঞের মতামত
বক্স অফিস বিশেষজ্ঞ আমোদ মেহরা বলেন, সচেতনভাবে উপেক্ষা করবেন বলেই সালমান খানের ছবি বা অন্যান্য বিগ বাজেটের ছবি দীপিকা একের পর এক ছেড়ে দিচ্ছেন বলে আমার তো মনে হয় না। এটা একটা কো-ইনসিডেন্স বলেই মনে হচ্ছে। এমনটা হতেই পারে যখন হয়ত ডেট-টেট নিয়ে আর সমস্যা নেই, তখন দীপিকা সালমানের সঙ্গে কোনো ছবিতে কাজ করলেন।