রোববার বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের মিডিয়া মুখপাত্র ডা. সাগুফা আনোয়ার।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন দিতি। দিতি দীর্ঘদিন ধরে নিউরোসার্জারি পরামর্শক সৈয়দ সায়ীদ আহমেদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুর সময় পাশে ছিলেন দিতির দুই সন্তান। দিতির মরদেহ দেখতে রোববার বিকেলে হাসপাতালে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। হাসপাতাল থেকে বের হয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আজ (রোববার) বাদ এশা গুলশানের আজাদ মসজিদে দিতির প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রাতে হাসপাতালের মর্গে লাশ রাখা হবে।
আগামীকাল সকালে গুলশানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে লাশ। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সেখানেই রাখা হবে। এরপর বাদ জোহর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
প্রসঙ্গত, মস্তিস্কে ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার পর দিতিকে গত বছরের ২৫ জুলাই মাদ্রাজের ইন্সটিটিউট অব অর্থোপেডিকস অ্যান্ড ট্রমাটোলজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানকার ডাক্তাররা আশানুরূপ কিছু করতে পারেননি। পরে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
দিতি দেশে ফেরার পরই তার চিকিৎসার্থে তার মেয়ের হাতে ১০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অসুস্থ হওয়ার আগে দিতি ‘লাইফ ইন আ মেট্রো’ ও ‘মেঘে ঢাকা শহর’ নামে দুটি নতুন ধারাবাহিক নাটকে কাজ করছিলেন। এছাড়াও প্রায় দুই শতাধিক ছবিতে কাজ করা এ অভিনেত্রী বদিউল আলম খোকন পরিচালিত ‘রাজা বাবু’ ছবির কাজও করছিলেন।
জনপ্রিয় অভিনেত্রী পারভীন সুলতানা দিতি ১৯৬৫ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘ডাক দিয়ে যাই’। তবে ছবিটি শেষ পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল আজমল হুদা মিঠু পরিচালিত ‘আমিই ওস্তাদ’।
সাংসারিক জীবনে দিতি দুই সন্তানের জননী ছিলেন। ১৯৮৭ সালে জন্ম নেন মেয়ে লামিয়া চৌধুরী আর ১৯৮৯ সালে জন্ম নেয় ছেলে দীপ্ত। তবে প্রথম স্বামী চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর সঙ্গে দিতির সংসার স্থায়ী হয়নি। পরে অবশ্য ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাত দুটার দিকে সোহেল চৌধুরী খুন হন বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবে। এক পর্যায়ে দিতি তার চলচ্চিত্র জুটি ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিয়ে করেন। কিন্তু সেই বিয়েও স্থায়ী হয়নি। দুজনের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে যায়।