২০১২ এশিয়া কাপ ফাইনালের পর আরেকবার তীরে এসে তরী ডোবার দৃশ্য দেখলো বাংলাদেশ! অথচ পুরোটা ম্যাচ বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ভারতের করা ১৪৬ রানের জবাবে শুরুতেই মোহাম্মদ মিঠুনের উইকেট হারালেও দারুণ শুরু করেছিলেন তামিম ইকবাল; সঙ্গে সাব্বির ও সাকিব। তামিম ৩৫, সাব্বির ২৬ ও সাকিব ২২ রান করে আউট হন। ভেতরে মাশরাফি এসেছিলেন প্রতিপক্ষের বোলিং পরিকল্পনা এলোমেলো করে দিতে। তিনি ৬ রান করে ফেরেন।
এরপরই বাংলাদেশকে আবার খেলায় নিয়ে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সৌম্য সরকার। ওপেনিং থেকে সরে ৭ নম্বরে নামা সৌম্য ২১ রান করে আউট হন। আর রিয়াদ ও মুশফিক জয়ের বন্দরে নিয়েই গিয়েছিলেন প্রায়। শেষ ওভারে মুশফিক পরপর দুটো চার মেরে ম্যাচ প্রায় মুঠোয় পুরে ফেলেছিলেন।
কিন্তু ওভারের চতুর্থ বলে সেই মুশফিকই তুলে মারতে গিয়ে আউট হলেন। পরের বলে ঠিক একই কাজ করলেন রিয়াদ। দু’জনের কেউ সিঙ্গেল নেয়ার বিন্দুমাত্র চেষ্টা না করে তুলে মারতে গিয়ে কার্যত শেষ করে দিলেন জয়ের সম্ভাবনা। আর শেষ বলে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে মুস্তাফিজের রান আউটে পরাজয়ের আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণ হলো।
এর আগে টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন মাশরাফি। আগের ম্যাচ থেকে একেবারেই বদলে যাওয়া এক বাংলাদেশ যেনো গতকাল ফিল্ডিং করতে নামলো। শরীরি ভাষা, ফিল্ডিং, অধিনায়কত্ব, বোলিং; সব তাক লাগানো। আর উজ্জীবিত এই বাংলাদেশের সামনে বিশ্বখ্যাত ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৪৬ রান করতে পারলো ভারত।
নিজে দারুণ নিয়ন্ত্রিত প্রথম ওভার বল করেই বুঝিয়ে দিলেন দিনটা অন্যরকম হতে যাচ্ছে। প্রথম ৫ ওভার ভিন্ন ভিন্ন পাঁচজন বোলারকে দিয়ে বল করালেন মাশরাফি। তার এই ‘সিঙ্গেল ওভার রোটেশন’ কাজে দিয়েছে দারুণ। প্রথম ৫ ওভারে উইকেট না হারালেও মাত্র ২৭ রান তুলতে পেরেছিলো ভারত। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভার, ষষ্ঠ ওভারে ১৫ রান এলেও ১৩ ওভার পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণেই রইলো রানরেট। ১৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ভারতের সংগ্রহ ছিল মাত্র ৮৪ রান; মানে ওভার প্রতি তখনও রান ৬.৪৬ করে।
ভারতের উইকেটসারিতে প্রথম আঘাত হেনেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে রোহিম শর্মাকে ফেরান তিনি। পরের ওভারেই ধাওয়ানকে এলবিডব্লিউ করেন সাকিব। আর বিরাট কোহলিকে বেধে রেখেই বোল্ড করে চমক দেখান বোলিং ওপেন করা শুভাগত।
১৬তম ওভারে এসে প্রথম দুই বলে রায়না ও পান্ডিয়াকে আউট করে ভারতের বড় স্কোর করার পথ বন্ধ করে দেন আল আমিন। এর মধ্যে আল আমিনের বলে পান্ডিয়ার ক্যাচটি ধরে সৌম্য সরকার আরও একবার আউটফিল্ডে বিদ্যুত্ চমকানোর কাজটা করলেন। অন্যদিকে মুস্তাফিজ নিজের শেষ ২ ওভারে ১৪ রান দেয়ার পাশাপাশি আরও একটি উইকেট তুলে নেন।