এর ফলে নতুন বেতন কাঠামোয় বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীর বাসা ভাড়া বাবদ ভাতা দ্বিগুণ হবে। আগে তারা বাসা ভাড়া বাবদ পেতেন ৫০০ টাকা। নতুন স্কেলে পাবেন ১০০০ টাকা। মেডিকেল ভাতা ৩০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০০ টাকা।চলতি মাস থেকে সব সরকারি কর্মচারী নতুন স্কেলে বেতন পেলেও অর্থ সংকটের কারণে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের নতুন পে-স্কেলে বর্ধিত বেতন দিতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। চলতি মাসে তারা ডিসেম্বরের বেতন তুলেছেন আগের (সপ্তম) বেতন স্কেলে। এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা মার্চ মাসের বেতন নতুন স্কেলে পাবেন এমপিও-সংক্রান্ত সভায় এ বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন দিতে প্রয়োজন ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এটি সংশোধিত বাজেটে সমন্বয় করা হবে। শিগগির অর্থ বিভাগ থেকে এ টাকা ছাড় করা হবে, যাতে তা ফেব্রুয়ারির বেতনের সঙ্গে সমন্বয় হয়। এটি সমন্বয় হলে তারা মার্চেই নতুন স্কেলে বেতন পাবেন। তবে গত জুলাই থেকে কার্যকর বেতনের পাওনা টাকা কয়েক ধাপে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কথা হয়েছে। এর ভিত্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় সারসংক্ষেপও তৈরি করেছে, যেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেখে দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মার্চ মাসের বেতনই এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা নতুন স্কেলে পাবেন।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তারা নতুন জাতীয় বেতন স্কেলের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বেতন-ভাতা চূড়ান্ত না করায় এ বাবদ বর্ধিত কোনো টাকা ছাড় হয়নি। এ কারণে তাদের বেতন হয়েছে আগের স্কেলে। এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে তাদের বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করেছে।৬ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বিভাগে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়, সারাদেশের ৪ লাখ ৭৭ হাজার ২২১ শিক্ষক-কর্মচারীকে নতুন পে-স্কেলে গত বছরের ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) বকেয়া বর্ধিত বেতন দিতে অতিরিক্ত ২ হাজার ৪৬৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার বেতন-ভাতা বাবদ ২ হাজার ৩৮৩ কোটি ২২ লাখ ৮২ হাজার ৯০০ টাকা এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ ৪৪ হাজার ১৯৪ টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন। এ প্রস্তাব পর্যালোচনা করে অর্থ বিভাগ থেকে বর্ধিত বেতন-ভাতা ছাড়ের সম্মতি দেয়া হয়েছে।
অর্থ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, নতুন বেতন স্কেলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ৪৩ দশমিক ৮১ ভাগ বেতন বেড়েছে। ফলে এ খাতে সরকারের ব্যয় বেড়েছে বছরে ৫ হাজার ৩৫৫ কোটি ২৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩৫০ টাকা। নতুন স্কেলে এমপিওভুক্ত কলেজের একজন প্রভাষকের মূল বেতন হবে ২২ হাজার টাকা (নবম গ্রেড)। বর্তমানে তারা ১১ হাজার টাকা পাচ্ছেন। সহকারী অধ্যাপকরা পাবেন ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা (ষষ্ঠ গ্রেড)। এখন পাচ্ছেন ১৮ হাজার ৫০০ টাকা। আর অধ্যাপকদের বেতন হবে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। আগে তা ছিল ২৫ হাজার ৭৫০ টাকা। আর বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষকের মূল বেতন হবে ১০ম গ্রেডে ১৬ হাজার টাকা, যা বর্তমানে ৮ হাজার টাকা। আর জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষকের বেতন হবে ২২ হাজার টাকা (নবম গ্রেড), এখন যা ১১ হাজার টাকা।