আমরা অনেকেই সারা জীবন ধরে অনেক কিছু চাই৷ কিন্তু আমাদের প্রয়োজন আর ধরাছোঁয়ার মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে কোনটা আমাদের আদতেই প্রয়োজন রয়েছে, সেই ব্যাপারটা বেছে নেওয়া মাঝেমধ্যে একটু কঠিন হয়ে পড়ে৷ কিন্তু জীবনে আমরা ঠিক কী কী চাই, আর কীভাবে একবার তার খসড়া করতে পারলেই, সমাধান হয়ে যায় অনেক সমস্যার৷
আসলে অনেক সময় আমরা ঠিক বুঝেও উঠতে পারি না নিজেদের থেকে আমাদের প্রত্যাশা ঠিক কী৷ মা-বাবা, স্বামী বা বন্ধুরা যা বলে আমরা যন্ত্রচালিতের মতো তা-ই করে যাই৷আর দিনের শেষে ব্যর্থতা আর ভালো না থাকার মতো ব্যাপারগুলো আমাদের চেপে ধরে৷তাই আপনাদের জন্য এমন কয়েকটি টিপস যেগুলো মেনে চললে বোঝা সম্ভব জীবনের কাছ থেকে আপনার প্রত্যাশা কী কী৷
১) অতীতকে ভুলে যান- আজ থেকেই নতুনভাবে শুরু করুন জীবনটা৷ আগে কী হয়েছে, অতীতের কষ্ট, যন্ত্রণা সব কিছু ঝেরে ফেলুন মন থেকে৷অতীতকে আঁকড়ে ধরে থাকলে না তো জীবনে কখনও সুখী হবেন, না তো এগোতে পারবেন সামনে৷পুরনো ভুলগুলো তো আর শোধরানো যাবে না৷ তাই পুরো মনোযোগটাই দিন বর্তমানে৷ এমনকী ভবিষ্যত নিয়েও খুব বেশি এই মুহূর্তে না ভাবাই ভালো৷ তবেই এগোতে পারবেন৷
২) ভাবুন ঠিক কী চান- নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করুন খুশি থাকার জন্য জীবনে আপনার কী কী চাই৷পরিবার, প্রেম, আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের মতো ব্যাপারগুলোকে আপনার প্রায়োরিটি অনুযায়ী পর পর সাজান৷উত্তরটা একবার পেয়ে গেলে জীবনে কীভাবে চললে সাফল্য মিলবে, তার পরিকল্পনা আপনি অনায়াসেই করতে পারবেন৷
৩) ভালো থাকার চাবিকাঠি- কোন কোন ভাবনাচিন্তা আপনাকে ভালো রাখে, সেগুলো একবার ঝালিয়ে নিন৷ আর সারাদিনের খানিকটা সময় অন্তত সেইসব ভাবনা (বা দিবাস্বপ্ন যাই হোক) –চিন্তাতেই কাটান৷ নিজেকে আগের থেকে অনেক বেশি ফুরফুরে এবং অর্গানাইজড মনে হবে৷
৪) পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা- কখনও ভেবেছেন আজ থেকে ঠিক পাঁচবছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান? সবসময় এটা গুছিয়ে ভাবা সম্ভব নয় মানছি, কিন্তু একটু ভাবলেই আপনার ভবিষ্যৎটা আপনার কাছে অনেক স্পষ্ট হয়ে যাবে৷আপনার জীবনের লক্ষ্য কী এবং আগামী পাঁচবছরে কীভাবে সেই লক্ষ্যে সাফল্যের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছনো যায়, তার রূপরেখা আপনাকেই ছকে রাখতে হবে৷ কারণ আপনাকে আপনার থেকে ভালো আর কেউ বোঝে না৷
৫) হবি- জীবন থেকে কখনও যেন রোমাঞ্চ হারিয়ে না যায়৷ জীবনে যদি কোনও অজানা কাজে হাত না দিয়ে একটু এক্সপেরিমেন্ট না-ই করলাম তাহলে তো জীবন সেই একই খাতে বইবে৷তাই নিজের কোনও অফবিট হবি বা শখকে খুঁজে বের করে চেষ্টা করুন তার পিছনে খানিকটা সময় কাটাতে৷
৬) অপছন্দ ভাগান- আপনার অপছন্দের জিনিসগুলো থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকুন৷সবেতে লোকনিন্দার ভয়ের অত পরোয়া করলে হয় না৷হতে পারে আপনার কর্মক্ষেত্রর পরিবেশ হয়তো আপনার ঠিক পছন্দের নয় বা যাকে আপনি বেস্ট ফ্রেন্ড বলে ভাবছেন, সে আসলে আপনার ভালো বন্ধুই নন৷ আর অপছন্দগুলোকে আপনি একবার ধরতে পারলেই, আজ থেকেই সেখানে রদবদল আনার চেষ্টা করুন৷জীবনের অযথা জটিলতা কেটে যাবে৷
৭) পরামর্শ নিন- এগুলো সবকিছুই মেনে চলছেন, অথচ জীবন যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরে৷তাহলে মা-বাবা, বোন, ব্নধুবান্ধব বা খুব প্রিয়জনের সঙ্গে আলোচনা করুন কীভাবে চললে আপনি খুশি থাকতে পারবেন৷ তারা আপনার ব্যাপারে এমন কোনও তুচ্ছ ব্যাপার বলল, যা আপনি আগে খেয়লাই করেননি হয়তো৷এই ছোট ছোট জিনিসগুলোই অনেক সময় বড় সমস্যার সমাধানে দারুণ কার্যকর ভূমিকা নেয়, আমরাও পৌঁছতে পারি অভীষ্ট লক্ষ্যে৷ এটা কিন্তু ভুললে চলবে না৷